Read Time:6 Minute, 24 Second

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনও বিপদমুক্ত নয়। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে কোনো কোনো অপশক্তি যাতে আবার গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত লক্ষ্য এবং সাফল্যের ধারাকে ব্যাহত করতে না পারে– সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সতর্ক থাকতে হবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতি জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ধর্মীয় পরিচয়ে বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়– সবাই বাংলাদেশি।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সারাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক সদস্য অংশ নেন।

ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার মন্তব্য করে তারেক রহমান হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্ভয়ে দুর্গোৎসব পালনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ আপনার, আমার, আমাদের সবার। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে– এটাই বিএনপির নীতি।

তারেক রহমান বলেন, গুম, খুন, অপহরণ কিংবা আয়নাঘরের ভীতিমুক্ত পরিবেশে অনেক বছর পর আতঙ্কমুক্ত ও স্বাধীনভাবে আজকের এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এ রকম একটি সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি সহজ ছিল না। এই স্বাধীন পরিবেশ সৃষ্টির জন্য গত ১৫ বছর ধরে দেশের সব ধর্ম-বর্ণের গণতন্ত্রকামী মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছিল। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় লক্ষ্য কোটি জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাজারো শহীদ আর অসংখ্য ভাইবোনের চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই স্বাধীন ও স্বস্তির পরিবেশ আমরা অর্জন করতে পেরেছি। গণতন্ত্র আর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এই রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে যারা হতাহত হয়েছেন– আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশের জনগণ সারাজীবন তাদের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

তিনি বলেন, আগামী মাসেই হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এই উৎসব উদযাপন করুন নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে নিরাপদে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকটি নাগরিক রাষ্ট্র বা সমাজে তাদের অধিকারগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে বিনা বাধায় উপভোগ করবে।

তারেক রহমান বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু ভোটের বিকল্প নেই। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনে সবচেয়ে বড় উদাহরণ বাংলাদেশ। পলাতক স্বৈরাচারের আমলে আদালত আর আয়নাঘর একাকার হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, যতদিন দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে নিজের ভোট দিয়ে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারবেন, ততদিন পর্যন্ত কোনো নাগরিকের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষিত নয়।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের রাজনীতি হচ্ছে সবাইকে নিয়ে। ভয়াবহ দানবকে একটা অবিশ্বাস্য বিপ্লবের মাধ্যমে সরানো হয়েছে। এই বিপ্লব নস্যাৎ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র। দুঃখজনকভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের এর ভেতরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আজকে আবার একই চক্রান্ত শুরু হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। এগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দেখবেন না। এর বিরুদ্ধে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিএনপির ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তপন দের যৌথ পরিচালনায় শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ড, আবদুল বারী ড্যানি, অর্পনা রায়, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, সুশীল বড়ুয়া, জনগোমেজ, মিল্টন বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বিচারবিভাগ নিয়ে রোডম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি
Next post ট্রাম্পের নিরাপত্তায় বিল পাস
Close