Read Time:6 Minute, 24 Second

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে, জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করার লক্ষ্যে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মুছে দিয়ে তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত রেখেছে। আমরা জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে আবারও সংযুক্ত করতে চাই।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে সোমবার খুলনা বিভাগের সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মালিকানা এদেশের মানুষের। আর স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন তাদের ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকার। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দল-বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার নির্বিঘ্ন করতে দলীয় সরকারের পরিবর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করেছিল।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করে। মানুষের নিরাপত্তা, বাক্ স্বাধীনতা, শান্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অধিকার, তরুণ ও যুবকের কর্ম সংস্থান, নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র গোষ্ঠী সমতল পাহাড়ি নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান রাষ্ট্রীয় অধিকার নিশ্চিত করা, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা, বিচার, আইন ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি এবং সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করাই বিএনপি রাজনীতির অগ্রাধিকার।

এ সময় তারেক রহমান আবেগের সঙ্গে বলেন, যে বাড়িতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাস করেছেন, যে বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চিতে তার ও তার ভাইয়ের শৈশব কৈশোরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যে বাড়ি তার মায়ের সংসারের সূচনা আর বৈধব্যের বেদনার স্বাক্ষী-সেই বাড়ি থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কতটা অসম্মানজনক ও অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেটা দেশবাসী দেখেছে। বিনা চিকিৎসায় তার একমাত্র ভাইকে নিদারুণ অবহেলায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে দলের তৃণমূলের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে মামলা হামলায় জর্জরিত হয়ে, পরিবার পরিজন বিসর্জন দিয়ে, ব্যবসা চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে-হয় কারাগারে নয়তো আত্মগোপনে। আর অগণিত নেতাকর্মী অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন দেশকে ভালোবেসে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে।

এতকিছুর পরেও তিনি তৃণমূল নেতাকর্মীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যেমন অতীতের মতো প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না-তেমনি তিনি এবং দলের প্রধান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও জানেন যে, দেশের মানুষও গত সতের বছর বাংলাদেশ নামের এক বৃহত্তর কারাগারে বন্দী জীবন যাপন করেছেন। সুতরাং আজ হিংসা নয় বরং দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে অতীতের সকল অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ বঞ্চনা সহ্য করে বিএনপি আজ জনগণের যে আস্থা আর ভালোবাসা অর্জন করেছে দলের কিছু বিপথগামীদের হঠকারিতায় মানুষের সেই আস্থা আর প্রত্যাশার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হবে-সেটা কোনো ভাবেই সহ্য করা হবে না। সেটা তিনি যেই হোন না কেন।

তিনি সমবেত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করুন, প্রতিরোধ করুন, দল তাদের শুধু বহিষ্কারের অঙ্গীকারই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, তৃণমূল সঙ্গে থাকলে দল যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যেমন সক্ষম হবে-তেমনি তার পক্ষেও অনেক সহজ হবে দল পরিচালনা।

তিনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ আর আগামীর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্র কাঠামো সংষ্কারের ৩১ দফা কর্মসূচির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরে এই বার্তা দেশের প্রান্তিক সকল মানুষের কাছে পৌঁছানোর নির্দেশ দেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ-ভারত
Next post বাফলা’র সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
Close