বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অতীতের সব জঞ্জাল পরিষ্কার করে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। সব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় সময় দিতে চাই। তবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়।
রোববার বিকেলে সিলেটে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মাত্র তিন মাসে সব জঞ্জাল দূর করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন এই সরকার যখন দেশকে একটি স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, দেশ যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছেন। এটি সফল হবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের একটি অংশ ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। গত ১৫ বছরে এমন আকস্মিক বন্যা আমরা দেখিনি। ভারত তাদের বাঁধ খুলে দেওয়ায় এই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে কোনো পূর্বাভাসও দেয়নি। উজানের পানির বেশিরভাগ ভারত থেকে আসে। তিনি বলেন, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের কোনো সুরাহা আজও হয়নি। পানি আগ্রাসনকে ভারত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সিলেট থেকে এই পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। এম ইলিয়াস আলী এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে তাকে গুম করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের কোনো সুরাহা আজও হয়নি। পানি আগ্রাসনকে তারা (ভারত) অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সিলেট থেকে এই পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। এম ইলিয়াস আলী এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে তাকে গুম করা হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত তারা জনসমর্থনহীনভাবে ক্ষমতায় ছিল, যার ফলে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা শুরু করেছিল। এবারও তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু দেশের সাধারণ ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। মানুষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়ে মুখ খুলে কথা বলতে পারত না। সাংবাদিকদের ও গণমাধ্যমকে এই আইনে দমন করা হতো। এখন মানুষ বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাতিল করে দেবো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১২ সাল থেকে আমরা এই সংগ্রাম করছি। সেই থেকে আমাদের প্রায় ৭০০ জনকে গুম করা হয়েছে, প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন। তিনি কখনো মাথা নত করেননি। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা আইনিভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আমরা ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া সবাইকে নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের একটি তদন্ত দলও এসেছে। আমরা আশাবাদী সঠিক তথ্য পাব। সরকারও সুনির্দিষ্ট ভাবে এখনো কিছু বলেনি। আমরা তাদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানতে চাই।
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
