বাংলাদেশে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সর্ম্পকিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেছে। একই সাথে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আরও দুটি সংসদ নির্বাচন হতে পারে। তবে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তত্ত্বাবাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন করেনি। ১৩ বছর পর রিমান্ডে তত্ত্বাবাবধায়ক সরকার বাতিলের ব্যাপারে মুখ খুললেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের হেভিওয়েট এই দুই ব্যক্তিকে গত ১৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা দিয়ে নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা ডিবি কার্যালয়ে রিমান্ডে আছেন।
রিমান্ডে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে প্রশ্ন করা হয়, আপনি তো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বানিয়েছেন, এতে লাভ কী হয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা আমি বানাইনি। এটা তো তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে।’
এ সময় ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘যে মন্ত্রণালয়ই আইন তৈরি করুক না কেন সেটা ভেটিংয়ের জন্য তো অবশ্যই আইন মন্ত্রণালয়ে গেছে। তখন আপনি ভূমিকা নিলেন না কেন? উপরন্তু বিতর্কিত আইনের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আর ওই আইনের মাধ্যমে অনেক সাংবাদিক ও পুলিশ কর্মকর্তাকে হয়রানি-নির্যাতন করা হয়েছে।’
এ সময় চুপ হয়ে যান সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ডিবির এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি তো মেনে নিয়েছিলাম। তারা যে এত দ্রুত সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে যাবে তা বুঝতে পারিনি।
আনিসুল হককে প্রশ্ন করা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আপনারা কেন বাতিল করলেন? জবাবে আনিসুল হক বলেন, আদালত স্বাধীন। এ সংক্রান্ত রায় আদালত থেকে এসেছে। সরকার শুধু বাস্তবায়ন করেছে।
এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘আদালত তো বলেছিলেন, সরকার চাইলে আরও দুই টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখতে পারে। আপনারা কেন সেটা রাখলেন না? ২০১৮ সালে যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়, তখন ছাত্ররা সব কোটা বাতিল চায়নি। তারা সংস্কার চেয়েছে। কিন্তু আপনারা কোটা বাতিল করে দিলেন কেন? জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এসব হয়েছে শুধু প্রধানমন্ত্রীর রাগ এবং একগুঁয়েমির কারণে। ডিবি কর্মকর্তার প্রশ্ন ছিল, ‘প্রধানমন্ত্রী যেহেতু রাগ করে কোটা বাতিল করেছেন, তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। এটা দেখিয়েই তো আপনি আইনমন্ত্রী হিসাবে পদত্যাগ করতে পারতেন?’
এ সময় আনিসুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। আপনারা যেমন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ মানতে বাধ্য, আমরা তেমন শেখ হাসিনার আদেশ মানতে বাধ্য ছিলাম।’ তখন ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতনের অন্যায় আদেশ মানতে বাধ্য না। আর অন্যায় আদেশ মানিনি বলেই দীর্ঘদিন পদোন্নতি হয়নি। পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল খারাপ জায়গায়। আপনারাও তো অন্যায় আদেশ না মানার দৃষ্টান্ত দেখাতে পারতেন।’
সূত্র : দৈনিক যুগান্তর
More Stories
সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার সমর্থন করেন না মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শৃঙ্খলা ফেরাতে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তার মানে প্রশাসন ফেল করছে (ব্যর্থ...
যুক্তরাষ্ট্রে মোদী-ইউনূসের মধ্যে বৈঠক হচ্ছে না
আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এই অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের...
ফ্যাসিজমের প্রেতাত্মারা বিজয়কে ব্যর্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিজমের অনেক প্রেতাত্মা অবস্থান করছে। তারা এখনো ছাত্র-জনতার বিজয়কে...
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পেলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা সারাদেশে প্রয়োগ করতে পারবেন/ ফাইল ছবি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পেলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। ‘দ্য...
অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না: তারেক রহমান
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে লাখো-কোটি জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফসল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি...
বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ার বড় সুখবর
নতুন করে প্লান্টেশন খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। ইতোমধ্যে দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন শুরু...