প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে ‘যাত্রাপালার সংলাপের ঢংয়ে সস্তা বিনোদনে ভরপুর’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার এই উল্লাসেই প্রমাণিত হয়—আওয়ামী সরকারের গণভিত্তি ধ্বসে গিয়ে নেতারা আত্মমর্যাদা হারিয়ে ফেলেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংবাদ ব্রিফিংয়ে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য যাত্রাপালার সংলাপের ঢংয়ে সস্তা বিনোদনে ভরপুর। এই ভদ্রলোককে দেখলাম, বর্তমান বিনাভোটের সরকারপ্রধানের কাছে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের একটি চিঠি নিয়ে প্রায় হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন। কাদের সাহেব বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, এখন আপনাদের সাহসের উৎস কোথায়? কে সাহায্য করবে? ওবায়দুল কাদেরের বাচালতাপূর্ণ এবং চটুল কথার দ্বারা নিজেদের অপকর্ম ও দখলদারিত্বের পাপ আড়াল করার চেষ্টা করতে গিয়ে আওয়ামী কলঙ্ক আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
রিজভী বলেন, গত অক্টোবর ২০২৩ সালে ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য নিশ্চয়ই সবার মনে আছে, ‘আপস হয়ে গেছে। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। দিল্লি আছে, আমরাও আছি।’ এই কথার অর্থ দেশের জনগণ নয় পরগাছা আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব টিকে আছে দিল্লির করুণার উপর। আওয়ামী লীগের চিরাগত ঐতিহ্যই হচ্ছে নিজ দেশের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করা।
বিএসএফের গুলিতে বিজিবি মারা গেলেও আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ করার সাহস নেই উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, বান্দরবানের নাইখ্যাংছড়িতে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সেখানে বাংলাদেশের নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়। সীমান্তে বাংলাদেশি এলাকায় নারী-পুরুষ কেউ নিরাপদ নয়। জীবন যাচ্ছে মর্টারের সেলে।
বাংলাদেশের চারিদিকে সীমান্ত এলাকায় এখন রক্তক্ষয়ী খেলা চলছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, মানুষের জীবন ও ভূমি এখন অরক্ষিত। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে দলে দলে লোক এবং অস্ত্র বাংলাদেশে অনুপ্রবিষ্ট হচ্ছে। আর বাংলাদেশ সরকারের অভিসন্ধিপ্রসূত নীরবতা মূলত দেশের মানুষকে নতজানু করার এক গভীর চক্রান্ত।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শান্তির বাণী এখন দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রতিদিনই পিছু হটছে, আর তাতে বাংলাদেশের মানুষ বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। অথচ বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা ছিল সুরক্ষিত এবং জনগণ ছিল নিরাপদ। এখানেই বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য। বিএনপির কাছে অবৈধ ক্ষমতা নয় জনগণের স্বার্থই বড়। এ কারণে বিএনপি ‘তলে তলে কিংবা প্রকাশ্যে’ কোনোভাবেই দেশ এবং জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কারো সঙ্গে আপোষ করেনি।
More Stories
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
ভারতে হাসিনার অবস্থান নিয়ে জয়শঙ্কর বললেন— সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান করা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী...
