সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেছেন, দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি আগের চেয়েও খারাপ হয়েছে। সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এক মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি এ কথা বলেন।
গত ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুলতানা কামাল বলেন, তথ্যমন্ত্রী অত্যন্ত স্পর্ধার সঙ্গে বলেছেন, মানবাধিকার এখন ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের নিজেদের সম্পদ কতখানি বেড়েছে আর কোন মানবাধিকারকর্মীর সম্পদ কতখানি বেড়েছে, সেই চ্যালেঞ্জ এখান থেকে করতে চাই। তারা মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করতে পারেন না। মানবাধিকারকর্মীদের সুরক্ষা দিতে পারেন না। সে ব্যর্থতা ঢাকতে আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেন, আমাদের হুমকিতে রাখতে চান।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী মানবাধিকার সুরক্ষাকর্মীদের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সুলতানা কামাল। ‘আদিবাসী মানবাধিকার সুরক্ষাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন’ শীর্ষক সম্মেলনটির আয়োজক কাপেং ফাউন্ডেশন। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে মানবাধিকার পরিস্থিতি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভূমি দখল, নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান অতিথি।
সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকারের কথা বলতে বললে এখন বিব্রত হই। পরিস্থিতি আগের চেয়েও খারাপ হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা নিজেদের মানবাধিকারের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থায় দাঁড় করিয়েছেন। সভ্য, গণতান্ত্রিক দেশে, মানবাধিকারবোধসম্পন্ন সমাজে মানবাধিকারকর্মীদের আতঙ্কে থাকার কথা নয়; আতঙ্কে থাকার কথা লুটেরাদের। যখন পত্রিকা পড়তে থাকি, আমি ভাবতে থাকি, আমি কি একটা বাস্তব জগতে বাস করছি! এটাও সম্ভব! একেকজন মানুষের সম্পদ ২০০ গুণ, ৩০০ গুণ, ৪০০ গুণ বেড়েছে। ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় দিবস পালন করব। স্বাধীনতা আমাদের গৌরব, অহংকার। আমাদের এই অহংকারের অবস্থা!
তিনি আরও বলেন, তারা বলতে পারে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। মুক্তিযুদ্ধের যেসব অঙ্গীকার ছিল, সেগুলো একটি একটি করে পালন করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির প্রমাণ দিক তারা। মুখে বলবে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, কিন্তু কোনো চেতনাধারা বজায় রাখবে না, সেটা তো সহ্য করব না। দেশটা তো ইজারা দিয়ে দিইনি। মুক্তিযুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। বিশেষ গোষ্ঠীর যুদ্ধ ছিল না। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নেতা ছিলেন, কোনো প্রশ্ন সেখানে তোলার নেই।
সুলতানা কামাল আরও বলেন, এই দেশের মানুষের দায়িত্ব আছে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করার। সরকার ‘আদিবাসী’ পরিচয়কে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। অধিকার রক্ষায় তিনি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জনগণকে ধৈর্য ধরে ঐক্যবদ্ধ থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
More Stories
বাংলাদেশ ব্যাংক কি নিষিদ্ধ পল্লী?
বাংলাদেশ ব্যাংক কি নিষিদ্ধ পল্লী? প্রশ্ন তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সেখানে (বাংলাদেশ ব্যাংক) সাংবাদিকদের কেনো...
আপনি একটা চিটার টাইপের মানুষ, আ. লীগ নেতাকে নিক্সন চৌধুরী
ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের সঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজার কথোপকথনের...
জিয়াউর রহমান বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, দাবি ওবায়দুল কাদেরের
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাকশাল সদস্য হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান...
‘শরীফ থেকে শরীফার’ গল্প বাদ দেয়ার সুপারিশ বিশেষজ্ঞ কমিটির
সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে আলোচিত শরীফ-শরীফা গল্প বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। গল্পে ব্যবহৃত অন্তত...
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার...
দেশকে আরো এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প...