গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষে অটল সমর্থনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের মুসলিম নেতারা বাইডেনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি পদে বাইডেন যেন জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেজন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা একজোটে হয়ে সামাবেশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।
মিনেসোটা রাজ্যের মুসলিম আমেরিকানরা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বাইডেনকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপরেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় #অ্যাবানডনবাইডেন প্রচারণা। পরে তা মিশিগান, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া ও ফ্লোরিডায় ছড়িয়ে পড়ে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা নিউজ আউটলেট অ্যাক্সিওসকে বলেছেন, ‘এই #অ্যাবানডনবাইডেন ২০২৪ সামাবেশটি আসন্ন মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতি এবং নিরপরাধদের রক্ষার ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করায় বাইডেনের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তের উদ্দেশে করা হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল মুসলিম ও আরব জনসংখ্যা বিরোধীতা করলে আগামী নির্বাচনে বাইডেনের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মার্কিন রাজনীতিতে দুটি দল ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের আধিপত্য থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের নাগরিক অধিকার রক্ষায় কাজ করে কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) নামে একটি সংগঠন। শনিবার মিশিগানের ডিয়ারবর্ন শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মিনেসোটা শাখার পরিচালক জায়লানি হুসেইনকে বাইডেনের বিকল্প নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে দুজন নয়, অনেক বিকল্প (প্রার্থী) আছে। তবে আমরা (মুসলিমরা) ট্রাম্পকেও (সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প) সমর্থন দিচ্ছি না।’
হার্ভার্ডের সাবেক অধ্যাপক ও কৃষ্ণাঙ্গ দার্শনিক কর্নেল ওয়েস্ট স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের নিন্দা করেছেন। আরেকটি দল গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনও গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ২০১২ আর ২০১৬ সালেও প্রার্থী ছিলেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস শনিবার বাইডেনের কথার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষা করার অধিকার রয়েছে। এ কথা বলে মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের যুদ্ধ স্থায়ীভাবে থামানোর চাপ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
ট্রাম্পকেও চান না:
মার্কিন মুসলিমরা বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনঃনির্বাচিত হলে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে এর থেকে ভালো এমন আশা তারা করেন না। তবে বাইডেনের ভোট বর্জন করাকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনার একমাত্র উপায় হিসেবে দেখেছেন তারা।
মুসলিম ভোটাররা গণহারে বাইডেনের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে ছোট ছোট কিছু পরিবর্তন হলে সামনের নির্বাচনে বড় পার্থক্য তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় আরব আমেরিকানদের মধ্যে বাইডেনের প্রতি সমর্থনে উল্লেখযোগ্য পতন প্রকাশিত হয়েছে। ২০২০ সালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠ থেকে তা নেমে এসেছে মাত্র ১৭ শতাংশে।
আরব আমেরিকান ইনস্টিটিউট অনুসারে, এই পরিবর্তনটি মিশিগানের মতো রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। গত নির্বাচনে রাজ্যটিতে ২ দশমিক ৮ শতাংশ পয়েন্ট ও আরব আমেরিকানদের ৫ শতাংশ ভোটে জিতেছিলেন বাইডেন।
More Stories
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প–মামদানি বৈঠকে প্রশংসা আর সৌহার্দ্যের বার্তা
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। দুই...
যুক্তরাষ্ট্রের ‘এইচ-১বি ভিসা’ পুরোপুরি বাতিলের উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসনের
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি দক্ষ কর্মী আনার সবচেয়ে বড় ভিসা কর্মসূচি এইচ-১বি পুরোপুরি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভিসা ফি শতগুণ বাড়ানোর...
আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিবিসিকে চিঠি পাঠালেন ট্রাম্প
ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার (১০ নভেম্বর) বিবিসির...
৮০ হাজার অ-অভিবাসী ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮০ হাজার অ-অভিবাসী ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো...
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: মামদানির হাতে ব্যালট-খামে বাংলায় লেখা
নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার আজ মঙ্গলবার নগরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনের লক্ষ্যে...
অন্য দেশের ‘সরকার বদলের’ মার্কিন নীতি শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড
কোনো দেশের সরকার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র যে নীতি মেনে আসছিল, তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা...
