বিএনপিসহ রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দিয়ে পুনরায় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজন। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। ইসির উদ্দেশে বক্তারা বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে শক্তিশালী। কমিশন চাইলে রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে নির্বাচনী তপশিলও পুনঃনির্ধারণ করা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার রাজধানী পান্থপথে ‘দৃকপাঠ’ ভবনে ‘আবারো সাজানো নির্বাচনঃ নাগরিক উৎকণ্ঠা’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি এই সভার আয়োজন করে। নির্বাচন বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। আলোচনায় বক্তব্য রাখেন নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা শিরিন হক, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ। সভায় আইনজীবি, মানবাধিকারকর্মী, সামাজিক আন্দোলনেরকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।
মূল প্রবন্ধে আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে নির্বিচারে মামলা দায়ের, বিচারিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সাজাপ্রদান ও নির্যাতনের মাধ্যমে সরকার দুটো লক্ষ্য অর্জন করতে চাচ্ছে। এক, নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় বিএনপির অংশগ্রহনের সুযোগ রুদ্ধ করা। দুই: সাজানো নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলনের শক্তিকে ধুলিসাৎ করা। একাজে পুলিশ, জনপ্রশাসন, ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে সরকার। নির্বাচনের এই আয়োজন এমনকি ২০১৮ ও ২০১৮ সালের চেয়েও নগ্ন, বেপরোয়া ও উদ্ধত। এই নির্বাচনের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অথনৈতিক ও সামাজিক সংকট ঘনীভূত হবে, এর সমর্থনকারী দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে নানাভাবে আরো বেশী অন্যায্য সুবিধা নেয়ার সুযোগ পাবে।
শারমিন মুরশিদ বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার আমাদের মনঃপুত না হলেও, নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে শক্তিশালী। তাদের উচিত হবে অনৈতিক ও অযৌক্তিকভাবে যাঁদেরকে রাজবন্ধী হিসেবে আটকে রাখা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া যাতে করে একটি সুষ্ঠূ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হতে পারে। নির্বাচনী তপশিল পুনঃনির্ধারণ করা, কেননা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। বর্তমানে যেই পরিস্থিতি তাতে নির্বাচন মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। গনতন্ত্র মানে আলোচনা এবং আলোচনার সুযোগ দিতে হবে, সুসংগঠিত হয়ে সকলকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে।
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
