দেশে ডলার সংকট এখনও কাটেনি। সংকট কাটাতে নিয়মিত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলার বিক্রি ও আমদানি দায় মেটাতে রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে রিজার্ভ কমছে ১৩১ কোটি বা এক দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি অর্থবছরের সারে চার মাসে কমেছে ৬ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া গত এক বছরের হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ৯ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ অক্টোবর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৪৭ কোটি মার্কিন ডলার। চলতি মাসের ২২ দিনে ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার কমে গত ২২ নভেম্বর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলারে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজাভের্র হিসাব। আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ আছে ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে রিজার্ভের এ চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরে জুন মাসে গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর গত বছরের ২২ নভেম্বর ছিল ৩৪ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ চলতি অর্থচছরে ৪ মাস ২২ দিনে রিজার্ভ করেছে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। আর গত এক বছরে কমেছে ৮ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার।
জানা গেছে, বিশ্বজুড়ে প্রচলিত ও বহুল ব্যবহৃত আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম-৬) অনুযায়ী, রিজার্ভ গণনায় বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন তহবিলের পাশাপাশি বিমানকে দেয়া ঋণ গ্যারান্টি, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেয়া ঋণ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকে আমানত এবং নির্দিষ্ট গ্রেডের নিচে থাকা সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক আগে এগুলোকেও রিজার্ভ হিসেবে দেখিয়ে আসছিল। এসব হিসাব বাদ দেয়ার কারণে রিজার্ভ থেকে ৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার কমে যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাজারে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট নেগেটিভ থাকায় রিজার্ভ কমছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কাঙ্খিত না হওয়ায় রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে।
রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।
More Stories
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
ভারতে হাসিনার অবস্থান নিয়ে জয়শঙ্কর বললেন— সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান করা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী...
কেউ যেন আমাদের ওপর কোনো দাদাগিরি করতে না আসে: ডা. শফিকুর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ভয় করি শুধু আল্লাহ তায়ালাকে। বাকি যাদের কথা বলেন, তাদেরকে আমরা...
পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে যাবে: প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে আরও এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয়...
ছাত্রশক্তির নেত্রী জেদনীকে বিয়ে করলেন এনসিপির হান্নান মাসউদ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বিয়ে করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামলী...
