ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে দেখা করতে রোববার ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে হঠাৎ সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বৈঠকে তিনি বলেছেন, গাজাবাসীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা উচিত নয়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলের মাটিতে ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হওয়ার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর এটিই ছিল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মার্কিন কূটনীতিকের প্রথম সফর।
এদিকে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক স্থল, বিমান এবং সমুদ্র পথে হামলায় গাজায় প্রায় ৯ হাজার ৮০০জন নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই বেসামরিক।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত বৈঠকের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ‘পররাষ্ট্র সচিব গাজায় জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো পুনরায় চালু করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং স্পষ্ট করেছেন যে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা উচিত নয়।’
ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, আব্বাস হামাস শাসিত গাজা উপত্যকায় হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছেন।
ব্লিঙ্কেনকে আব্বাস বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের নীতির প্রতি কোন গুরুত্ব না রেখে ইসরায়েলের যুদ্ধযন্ত্রের হাতে গাজায় আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণ যে গণহত্যা ও ধ্বংসের শিকার হয়েছে তা বর্ণনা করার জন্য আমার কাছে কোন শব্দ নেই।’
ব্লিঙ্কেন রোববার সকালে তেল আবিবে উড়ে যান এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের রামাল্লা সদর দপ্তরে একটি উচ্চ-নিরাপত্তা কাফেলায় ভ্রমণ করেন।
যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড কে পরিচালনা করবে এই প্রশ্ন উত্থাপন করে ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজার হামাস শাসকদের ধ্বংস করতে চেয়েছে।
পশ্চিম তীরে সহিংসতা
বার্তা সংস্থা ওয়াফার মতে, তবে আব্বাস বলেছেন, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম এবং গাজা উপত্যকাকে ঘিরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের জন্য একটি ‘বিস্তৃত রাজনৈতিক সমাধান’ পাওয়া গেলেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ক্ষমতা নিতে পারে।
হামাস ২০০৭ সালে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহিংসভাবে গাজা উপত্যকা দখল করে। এর আগের বছর সংসদীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত ক্ষমতা প্রয়োগে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
ব্লিঙ্কেন এবং আব্বাস ‘পশ্চিম তীরে শান্ত ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চরমপন্থী সহিংসতা বন্ধ করা এবং তাদের জবাবদিহিতার জন্য দায়ী করা প্রয়োজন’ বলে জানিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের জন্য সমানভাবে মর্যাদা ও নিরাপত্তার সমান ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে বলেও স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সাথে সংঘর্ষ এবং ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণে পশ্চিম তীরে ১৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, রোববার পশ্চিম তীরে চারজন নিহত হয়েছেন।
More Stories
সবার কাছে স্বীকৃতি পাবে এমন নির্বাচন দেখতে চায় জাতিসংঘ
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডেনিস ফ্রান্সিস জানিয়েছেন, সবার কাছে অবাধ ও সুষ্ঠু হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বাংলাদেশে এমন একটি নির্বাচন দেখতে...
বিএনপির সমাবেশের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন পিটার হাস, অভিযোগ রাশিয়ার
ঢাকায় গত মাসে সরকারবিরোধী সমাবেশের পরিকল্পনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া...
ইউক্রেন যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণ হবে আগামী মাসে: ম্যাক্রোঁ
চলতি বছরের শেষে ইউক্রেন যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। তবে অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সংলাপে বসার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে...
এক ভিসায় ঘোরা যাবে মধ্যপ্রাচ্যের ৬ দেশ
ইউরোপের শেনজেন ভিসার মতো এবার নতুন ভিসা পদ্ধতি চালু হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যেও। সর্বসম্মতিক্রমে এ অঞ্চলের জন্য প্রস্তাবিত ‘ইউনিফায়েড ট্যুরিজম ভিসা’ বা...
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অবস্থান স্পষ্ট করলো ভারত
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছে নয়াদিল্লি। বৈঠকে বাংলাদেশের কিছু বিষয় নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা হয়েছে...
চীনকে দমাতে শ্রীলঙ্কায় বড় বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের
চীনের প্রভাব রোধ করতে শ্রীলঙ্কায় ৫৫৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কলম্বো ওয়েস্ট ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল প্রাইভেট লিমিটেডকে (সিডব্লিউআইটি) এ...