বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষের শান্তি নেই, নিরাপত্তা নেই, রাস্তায় শান্তিতে বের হতে পারে না। আপনারা নিশ্চিত থাকেন, পরিবর্তন আসছে, পরিবর্তন হবে, সত্যের-সুন্দরের জয় হবে।
তিনি বলেন, আজ দেশের মানুষ জর্জরিত। তাদের দম বন্ধ হয়ে আসছে। চাল, ডাল, লবণ, তেল কোনো পণ্যের দামই আর সহনশীল অবস্থায় নেই।
রোববার (১৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরির জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। যেখানে সবার সমান সুযোগ থাকবে। মানুষ তার মেধার বিকাশ ঘটাতে পারবে। সেখানে আজ কিছু সংখ্যক মানুষের হাতে রাষ্ট্র দখল হয়ে গেছে। যারা এই রাষ্ট্রকে নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিবেচনা করছে। এজন্য তারা সমস্ত ক্ষেত্রগুলোকে দখল করে নিয়েছে। গণতন্ত্র ছাড়া কখনো এগুলো ঠিক হবে না। অর্থাৎ, কোনো ফ্যাসিস্টের হাতে কখনো কোনো দেশের মঙ্গল হয় না, ধ্বংস হওয়া ছাড়া।
তিনি বলেন, কথায় আছে, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। সেই বাতাসে নড়তে শুরু করেছে। এখন সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। দেশের মানুষ এক বাক্যে শেখ হাসিনার পতন চায়, এই সরকারের পতন চায়। তারা সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চায়। আমরা একটি মুক্ত, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। যেখানে সবার অধিকার নিশ্চিত হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশের নির্বাচন নাকি এখন দেশে নেই, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে গেছে। প্রধানমন্ত্রী আবার বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে বাইরের কোনো শক্তি নেই। এসব কথা বলার উদ্দেশ্য, তারা (সরকার) কত ভয় পেয়েছে, কত সন্ত্রস্ত হয়ে গেছে যে, আজ সব জায়গা থেকে বলা হচ্ছে, তোমাকে (শেখ হাসিনা) সুন্দর, সঠিক নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। সেই কারণে তারা এসব কথা বলতে শুরু করেছে। বিএনপি মানুষের শক্তিতে বিশ্বাস করে। বিএনপির গণতান্ত্রিক রাজনীতি আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, ডব্লিউএইচও বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিততে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে। মানে সবচেয়ে উঁচু একটি সতর্কবার্তা দিয়েছে। প্রতিদিন ১০-১৪ জন করে মারা যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের কথা শুনে একবারও মনে হয় না, এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগ আছে। জেলখানায় আমরা যেভাবে সারি করে শুয়ে থাকি, তেমনি মুগদা হাসপাতালের মেঝেতে শিশুরা শুয়ে আছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা হচ্ছে। এত উন্নয়ন, মেগা প্রজেক্ট, তারপরও কেনো বাচ্চারা সঠিক চিকিৎসা পাবে না? কারণ একটাই, শেখ হাসিনার সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার একটি বাড়িতে হঠাৎ করে জঙ্গিবিরোধী অভিযান হয়েছে। সেখান থেকে ছয়জন মহিলা, চারজন শিশু ও চারজন পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে। সঙ্গে নাকি তিন কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে। হঠাৎ এগুলো কই থেকে এলো? কারা আনল? কীভাবে আনল? যখন আন্দোলন ঊর্ধ্বে থাকে তখন জঙ্গি নাটক অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকবার, প্রতিটি ক্ষেত্রে এটি হয়। এখন দেখবেন, জঙ্গির কথা বলে মানুষকে ডাইভার্ট করবে। তাদের দৃষ্টি সরিয়ে নেবে। পশ্চিমা বিশ্বকে আবার জুজুর ভয় দেখাবে। বলবে, এই দেখো, বাংলাদেশে আমরা যদি না থাকি, তাহলে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এভাবে নাটক করতে করতে তারা (আওয়ামী লীগ) এই জায়গায় এসেছে।
More Stories
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
ভারতে হাসিনার অবস্থান নিয়ে জয়শঙ্কর বললেন— সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান করা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী...
কেউ যেন আমাদের ওপর কোনো দাদাগিরি করতে না আসে: ডা. শফিকুর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ভয় করি শুধু আল্লাহ তায়ালাকে। বাকি যাদের কথা বলেন, তাদেরকে আমরা...
পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে যাবে: প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে আরও এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয়...
ছাত্রশক্তির নেত্রী জেদনীকে বিয়ে করলেন এনসিপির হান্নান মাসউদ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বিয়ে করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামলী...
