মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান বান কি মুনের
মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন; আর এ ক্ষেত্রে দেশটির সেনাবাহিনীকেই ‘প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। মঙ্গলবার দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার পর বান এ আহ্বান জানান।
চলতি সপ্তাহের এ সফরে বান মিয়ানমারের সংস্কারবাদী সাবেক প্রেসিডেন্ট থিয়েন সেইনের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সহিংসতা-কবলিত মিয়ানমারে বানের এ সফরকে শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই দেশটি সংকটে আছে। দেশটির ক্ষমতা সংহত করার চেষ্টারত জেনারেলরা বিভিন্ন ফ্রন্টে সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের ও সশস্ত্র গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
সাবেক বিশ্ব নেতাদের গোষ্ঠী ‘দ্য এলডার্স’ এর ডেপুটি চেয়ারম্যান বান এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি সামরিকবাহিনীকে সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপ শুরু করার আহ্বান জানানোর জন্য মিয়ানমারে এসেছি।”
রাষ্ট্রায়ত্ত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বান ও মিন হ্লাইং মিয়ানমারের সর্বসাম্প্রতিক অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করেছেন এবং গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে আন্তরিকভাবে এটি আলোচনা করেছেন।”
মিয়ানমারের সামরিকবাহিনীর আমন্ত্রণে রবিবার দেশটিতে যান দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক বান। সফরে দেশটির জেনারেলদের ২০২১ সালে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্স (আসিয়ান) এর সঙ্গে ঐকমত্য হওয়া শান্তি সমঝোতা অনুযায়ী কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। বান সতর্ক করে বলেন, “মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা হলে তা আরো সহিংসতা ও বিভক্তির ঝুঁকি তৈরি করবে আর মিয়ানমারের জনগণ, আসিয়ান ও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ঐ ভোটের ফলাফলের স্বীকৃতি দেবে না।”
ফেব্রুয়ারিতে মিন অং হ্লাইং বলেছিলেন, ‘জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী’ বহুদলীয় নির্বাচন অবশ্যই হবে; কিন্তু কবে হবে তার কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি। পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের পর ২০১১ সালে পরীক্ষামূলক গণতান্ত্রিক সংস্কার শুরু হলে জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে বান বেশ কয়েক বার মিয়ানমার গিয়েছিলেন। ঐ সময় মিয়ানমারের অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল থিয়েন সেইনের অধীনে হওয়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের পক্ষে বান সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ফের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে সব ধরনের সংস্কার বন্ধ হয়ে যায়। এখন দেশটিতে সহিংসতা বন্ধ হওয়ারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
সু চি এখন বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের বিচারের রায়ে হওয়া ৩৩ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন, যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পরে তার গণতন্ত্রপন্থি দলকেও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
More Stories
সৌদিতে সাত দিনে ২২ হাজারের বেশি অভিবাসী আটক
সৌদি আরবে আবাসন ও শ্রম আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে চলা অভিযানে এক সপ্তাহে ২২ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটি।...
ওমরাহতে যাওয়ার আগে রিটার্ন টিকিট বাধ্যতামূলক করলো সৌদি
এখন থেকে সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গেলে রিটার্ন টিকিট কাটতে হবে ও যাত্রার সময় চেক-ইন কাউন্টারে ফিরতি টিকিট দেখানো বাধ্যতামূলক...
হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের বিচার নিয়ে যা বললেন ভলকার তুর্ক
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে জোরপূর্বক গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করা...
হাসিনার দশা হলো মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্টের
আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা দেশ ছেড়ে গেছেন বলে জানিয়েছে ফরাসি রেডিও আরএফআই। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল...
বিজ্ঞানের ‘সমতার শক্তিতে’ ফিলিস্তিনি শরণার্থী থেকে নোবেল জয়
জর্দানে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারের সন্তান হিসেবে একদমই সাধারণ পরিবেশে জন্ম নেওয়া রসায়নে নোবেল বিজয়ী ওমর এম ইয়াগি বুধবার বিজ্ঞানের ‘সমতার...
স্ত্রীর চিৎকারে ভেবেছিলেন ভালুক, পরে শোনেন নোবেল জিতেছেন
মন্টানার রকি পর্বতমালায় ক্যাম্পিং ও হাইকিং করছিলেন প্রফেসর ফ্রেড র্যামসডেল। হঠাৎ স্ত্রীর চিৎকার শুনে ভাবেন, হয়তো ভালুক এসেছে। কিন্তু পরে...
