Read Time:5 Minute, 54 Second

ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বুধবার (১২ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে ভোট পর্যবেক্ষণ শেষে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার কথা জানান গণমাধ্যমকর্মীদের জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

এর আগে দুপুর পর্যন্ত মোট ৫১টি কেন্দ্রের নানা অনিয়মের অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এই উপনির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় ৮৮টি ও ফুলছড়ি উপজেলায় ৫৭টিসহ মোট ১৪৫টি ভোটকেন্দ্র ছিলো।

সকালে সিসিটিভি ফুটেজে ভোটের পরিস্থিতি দেখে সিইসি বলেছিলেন, ভোট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আমরা স্বচক্ষে গোপন কক্ষে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোট দিয়ে দিতে দেখেছি। তাই ভোটকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে।

অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ করার সিদ্ধান্তে কিছুটা অবাক হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। আ.লীগের এই নেতার দাবি, কোনো কেন্দ্রেই নৈরাজ্য হয়নি। অথচ ফুটেজ দেখে ভোট বন্ধের ঘোষণা দিয়ে দেয়া হলো! এতগুলো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইসি কীভাবে নিল?

বুধবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন তিনি।

নির্বাচন স্থগিতে ইসির সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তুলে হানিফ বলেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রেই নৈরাজ্য হয়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এতগুলো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইসি কীভাবে নিল- তা বোধগম্য নয়।

এর আগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে এসে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অনিয়মের কারণে ৫১টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম পুরো নির্বাচনি এলাকায় ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার। সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। সেখানে আর ভোট হচ্ছে না। ভোটের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে। বন্ধ হওয়া ভোটের বিষয়ে আইন পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিরোধী দলকে খুশি করার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ওই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান রিপন।

বুধবার (১২ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে সাঘাটা উপজেলা আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে জেলা ও উপজেলার আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

স্থগিত হওয়ার ঘটনাকে নাটক বলে অভিহিত করেছেন এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

বুধবার (১২ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, “পোলিং এজেন্ট নিয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ এবং উদ্বেগের কারণ আজ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ইসির সাথে সংলাপে আমরা বলেছিলাম পোলিং এজেন্ট পদ্ধতি বাতিল করে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপন করতে। আজ সিইসি স্বয়ং দেখেছেন একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দিচ্ছে। সরকারি দলের পোলিং এজেন্টরা প্রতিপক্ষের কোন এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে থাকতে দেয়নি। ভয়ভীতি সৃষ্টি করে তারাই সাধারণ ভোটারদের হয়ে নৌকার পক্ষে ইভিএম মেশিনে ভোট দিয়েছে। তবে আমরা মনে করি, গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন বাতিল ঘোষণা না করে বন্ধ ঘোষণা করা নির্বাচন কমিশনের একটি “নাটক”। অনুগত দলকানা প্রশাসন আর আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীর দৌরাত্ম্যের কারণে বর্তমানে সুষ্ঠু নির্বাচনের আর কোনো পরিবেশ বাকি নেই। জাতীয় নির্বাচনের আগে নূন্যতম পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলেও ইসিতে প্রস্তাবিত আমাদের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।”

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রবাসীর মৃত্যু
Next post ২ খাতে বাংলাদেশকে ঋণ দেবে আইএমএফ
Close