জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত মর্যাদাপূর্ণ ওই পর্ষদের ভোটাভুটিতে ১৯৩ ভোটের মধ্যে ১৬০ ভোট পেয়ে ২০২৩-২৫ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। এতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আরও ৩টি দেশ বিজয়ী হয়েছে। বাংলাদেশ এ অঞ্চলের ৪টি আসনের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। বিজয়ী অন্য তিন দেশ হলো- মালদ্বীপ(১৫৪ ভোট), ভিয়েতনাম (১৪৫ ভোট) ও কিরগিজস্তান(১২৬ ভোট)। নির্বাচনে এ অঞ্চলের মোট ৬টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল। যার মধ্যে কাগজে-কলমে আফগানিস্তান থাকলেও তারা ছিল নিষ্ক্রিয়। দক্ষিণ কোরিয়া সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিল শেষ পর্যন্ত, কিন্তু মেসিভ ক্যাম্পেইন করেও তারা ফসল ঘরে তুলতে পারেনি। দক্ষিণ কোরিয়া মোট ভোট পেয়েছে ১২৩টি। নির্বাচনে আফগানিস্তান পেয়েছে ১২ ভোট।
ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ জিতবে এটা আগেই ধারণা করা হয়েছিল, কিন্তু বাহরাইন শেষ সময়ে এসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোয় জয়ের পথ কেবল প্রশস্তই হয়নি বরং এটা ভোটের ব্যবধান বাড়িয়েছে।
ঢাকা ও নিউ ইয়র্কের কর্মকর্তারা বলছেন, শুরু থেকেই মালদ্বীপের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতার আভাস পাওয়া যাচ্ছিলো। ভোটের ফলাফলেও তার প্রতিফলন দেখা গেছে। কারণ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদ্য সাবেক সভাপতি ছিলেন মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহিদ। তার একটা ইনফ্লুয়েন্স বরাবরই কাজ করেছে।
সেগুনবাগিচার এক কর্মকর্তা বলেন, খুব সহজেই বাংলাদেশ নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়েছে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। কেননা মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশের জয়টা ছিল চ্যালেঞ্জের। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন থাকার বিষয়টি প্রতিদ্বন্দ্বীরা ক্যাম্পেইনকালে নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করতে পারে এমন ভয় ছিল ঢাকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাংলাদেশের জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
কর্মকর্তারা বলছেন, ওই নির্বাচনে প্রার্থীর বিচারে শুরু থেকেই সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ । বাহরাইন সরে দাঁড়ানোর কারণে মধ্যপ্রাচ্যের ভোটগুলো বাংলাদেশের পক্ষে আসে অনায়াসে। এক কূটনীতিকের ভাষ্যমতে, চ্যালেঞ্জ থাকায় শুরু থেকেই বাংলাদেশ ভালো প্রচারণা চালিয়েছে। ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট মানবাধিকার পরিষদে এর আগে বাংলাদেশ টানা দুই মেয়াদে ২০১৫ থেকে ২০২১ পর্যন্ত পরিষদের সদস্য ছিল। নিয়ম অনুযায়ী দুই মেয়াদে সদস্য থাকার পর অন্তত এক বছর বিরতি দিয়ে নির্বাচন করতে হয়।
মানবাধিকার পরিষদের ভোটাভুটি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আগেই গণমাধ্যমকে বলেন, ভোটাভুটিতে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা জিতবো। কারণ আমরা পৃথিবীতে মানবাধিকারের ব্যাপারে বড় সোচ্চার দেশ। সবসময় আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে, মানুষের মানবিক অধিকারের জন্য সংগ্রাম করি।
More Stories
বিজয়ের ৫৫ বছরে লস এঞ্জেলেসে কমিউনিটির প্রাপ্তি
- কাজী মশরুল হুদা বিজয়ের ৫৫ বছর হতে চলেছে। প্রায় ২ কোটির মত প্রবাসী বাংলাদেশী বিশ্বজুড়ে বসবাস করছে। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে...
গণঅভ্যুত্থানের সময় আমিরাতে আটক ২৪ বাংলাদেশি মুক্তি পাচ্ছেন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক হওয়া আরও ২৪ বাংলাদেশি নাগরিক মুক্তি পাচ্ছেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর)...
থাইল্যান্ডের ই-ভিসা নিয়ে সতর্কবার্তা দূতাবাসের
বাংলাদেশের কয়েকটি এজেন্সি ২-৩ ঘণ্টায় থাই ই-ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। যা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ রয়েল থাই দূতাবাস।...
মামদানির জয়ের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জারা রহিম
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি। কিন্তু তার এই ঐতিহাসিক বিজয়ের নেপথ্যে ছিলেন...
বাংলাদেশি ও ভারতীয়দের ভিসা গণহারে বাতিলের ক্ষমতা চাইছে কানাডা
কানাডার সরকার বিদেশিদের গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা পাওয়ার চেষ্টা করছে। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভারত ও...
দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে প্রত্যর্পণে কাজ করছে মালয়েশিয়া
বেস্টিনেটের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর এবং তার সহযোগী রুহুল আমিন স্বপনের প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ নিয়ে কাজ...
