বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় বিদ্যুৎ খাতে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সার্বিক ব্যর্থতার একটি চিত্র। এটা শুধু বিদ্যুৎ খাতে নয়, সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার ঘটনা ঘটছে। ফলে আজ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য মূলত দায়ী সরকারের অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা, যার লক্ষ্য হচ্ছে দুর্নীতি।
জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দুপুর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ অধিকাংশ জেলায় ৬ ঘণ্টা বিদ্যুতহীন থাকার প্রসঙ্গে এক প্রতিক্রিয়ায় বুধবার বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে বহু প্রজেক্ট করেছে, টাকা পয়সাও লুটপাট করেছে। আবার শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এর ফলে জাতিকে এক অসহনীয় অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
বুধবার দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অসুস্থ সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে দেখতে যান মির্জা ফখরুল এবং স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পরে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী মডেল অব ইকোনমি। এটা (জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়) তার প্রতিফলন। তারা দুর্নীতির জন্য একচেটিয়া কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট দিয়েছে। যাতে তাড়াতাড়ি টাকা বানানো যায়। কিন্তু এগুলোর ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশনের যে সিনকোনাইজেশন দরকার তা করে নাই। কারণ সেদিকে তারা মনোযোগ দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, তাদের (সরকার) নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে সব প্রকল্প দেয়া হয়েছে। আইনও করা হয়েছে যে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা যাবে না এবং তাদেরকে সমস্ত সুযোগ-সুবিধাসহ ফিক্সড চার্জসহ নিয়মিত পয়সা দিচ্ছে। এখন জনগণকে তার মূল্য দিতে হচ্ছে।
বিএনপির আমলের সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, সারাদেশে যে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো দিয়েছে সেগুলো ইউনিফাইড স্পেসিফিকেশনে দেয় নাই। যার ফলে কোনো পাওয়ার স্টেশন খুব নিউ জেনারেশনের আবার কোনটা পুরনো। এদের মধ্যে সিনকোনাইজড করা সম্ভব না। শুধু জেনারেশনে বিদ্যুৎ চলে না, ট্রান্সমিশনে লাগবে, ডিসট্রিবিউশনে লাগে। এগুলোর উন্নতি হয় নাই। খালি বিদ্যুৎ প্রকল্প বানিয়েই গেছে।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র লুটপাটের জন্যই সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে পাওয়ার স্টেশন দিয়েছে। সেসব পাওয়ার স্টেশনের স্পেসিফিকেশনগুলো কি, প্রসিডিউরগুলো কি, এটা একটার সাথে আরেকটা ম্যাচ করবে কিনা এসব বিবেচনা করে নাই। না করার ফলে বিদ্যুতের এই বিপর্যয় ঘটেছে।
সরকারের তথ্য উপরিকাঠামোর ঘোষণার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা ভয়াবহ ব্যাপার, ভয়াবহ নিয়ন্ত্রণ। কর্তৃত্ববাদী এই সরকার তথ্যকে আরো নিয়ন্ত্রণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করবে, দেশের মানুষকে বঞ্চিত করবে এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। এখন আর কোনো ফাঁক ফোকর রইল না। এই সার্কুলারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এটা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
