পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, ঢাকা আশা করছে যে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করবে।
মঙ্গলবার তুরস্কে অবস্থানরত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, “আমরা আশা করছি তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে, আমরা তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব, আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন।
ড. মোমেন বলেন, কিছু এনজিও অথবা মানবাধিকার সংস্থা তাদের প্ররোচনা দেয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটি দুর্ভাগ্যজনক যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে পরামর্শ না করে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার পাশাপাশি মাদক পাচারের বিরুদ্ধে র্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, অথচ যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নীতি হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করা। যুক্তরাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্তই ঠিক এমন নয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই নিষেধাজ্ঞা ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না, কারণ সরাসরি অব্যাহত আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ‘অত্যন্ত মধুর’ হয়ে উঠছে।
ভারতের রাষ্ট্রপতির সফর সম্পর্কে ড. মোমেন বলেন, এটি একটি “উচ্চ অগ্রাধিকারের প্রতিফলন” যা ঢাকা ও নয়াদিল্লি উভয়ের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সাথে যুক্ত।
তিনি বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতির সফরটি মূলত আনুষ্ঠানিক হলেও দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা কবে বলে আশা করা হচ্ছে।
র্যাব এবং বর্তমান মহাপুলিশ পরিদর্শক ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজির আহমদসহ বর্তমান ও সাবেক সাতজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রেজারি এবং ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট মানবাধিকার সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
পরদিন শনিবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তার কার্যালয়ে তলব করে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় ঢাকার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র দপ্তরে এসে পৌঁছালে “পররাষ্ট্রসচিব মোমেন বাংলাদেশের হতাশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কোন পূর্ব পরামর্শ ছাড়াই মার্কিন প্রশাসন একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের উত্থাপিত উদ্বেগের বিষয়টি নোট করেছেন এবং ওয়াশিংটন ডিসি কে তা জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। “তিনি (মিলার) সম্মত হয়েছেন যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে চলমান আলোচনা প্রক্রিয়ায় চমৎকার বহুমুখী সম্পর্ক আরও গভীর করা যেতে পারে।”
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত পারস্পরিক স্বার্থের ইস্যুতে আগামী দিনে বাংলাদেশ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকার জন্য মার্কিন সরকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
More Stories
সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাতে নিরাপদে থাকে: সালাহউদ্দিন
ওসমান হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে না বরে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।...
‘চারদিকে ছড়িয়ে থাকা লাখ লাখ হাদির মতো আমিও ভয় পাই না’
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা ও পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল...
দেশে ফিরছেন তারেক রহমান: প্রস্তুত হচ্ছে বাড়ি-কার্যালয়
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। এ উপলক্ষে তার বাসভবন ও কার্যালয়ের সংস্কার কাজ প্রায় সম্পন্ন...
হাদির পরিবারকে সান্ত্বনা প্রধান উপদেষ্টার, সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারকে সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর...
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত, লড়াই চলছে
সুদানে সন্ত্রাসীদের হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার খুদে বার্তায় এ কথা জানায়। আইএসপিআর...
‘হাদির অস্ত্রোপচারের সময় দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) অস্ত্রোপচারের সময় দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট...
