Read Time:4 Minute, 18 Second

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান ছিলেন।

বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে।

১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রোহিঙ্গা নেতার বুকে তিনটি গুলি লাগে। তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ক্যাম্পের এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় আসেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। এরপর বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করলে তিনি এর বিরোধিতা করেন।

মুহিবুল্লাহর নেতৃত্বাধীন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ২০১৯ সালে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বিশাল সমাবেশ আয়োজন করে আলোচিত হয়। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে সাক্ষাৎ করেন। প্রত্যাবাসন কর্মসূচি ঠেকিয়ে দেওয়ার পেছনে তিনি মূল কলকাঠি নাড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ ১৯৯২ সালে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। তখন থেকেই তিনি রয়েছেন টেকনাফ অঞ্চলে। ১৫ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ বা এআরএসপিএইচ। স্থানীয় বাংলাদেশি মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গেও গড়েন যোগাযোগ। ধীরে ধীরে মুহিবুল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন।

মুহিবুল্লাহর মূল উত্থান হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআরকে সংযুক্ত করার পর। রোহিঙ্গাদের বক্তব্য জানার চেষ্টা থেকেই মদদ পায় মুহিবুল্লাহর সংগঠন এআরএসপিএইচ।

ইংরেজি ভাষা ও রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন বিদেশিদের। ২০১৮-এর জুলাইয়ে র‌্যাব একবার মুহিবুল্লাহকে আটক করে উখিয়া থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশে কোনো ধরনের রেকর্ড ছাড়াই তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর গত এক বছরে জাতিসংঘ মহাসচিবসহ যত বিদেশি প্রতিনিধি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে মুহিবুল্লাহ ও তার সঙ্গীদের সাক্ষাৎ করানো হয়েছে।

এই মুহিবুল্লাহই মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post এক্রিটিভ মিডিয়ায় নিযুক্ত হলেন বাংলাদেশের তিন তরুণ
Next post অবারিত সুযোগ, দেশে বিনিয়োগ করুন: প্রবাসীদের মন্ত্রী
Close