Read Time:6 Minute, 23 Second

রোম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (International Fund for Agricultural Development, IFAD)-এর প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হুংবো (Gilbert F. Houngbo) বাংলাদেশ-কে বর্তমানে ইফাদের সর্ববৃহৎ পোর্টফোলিও হিসেবে উল্লেখ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সম্পদ ব্যবহারে বাংলাদেশের সক্ষমতার উচ্ছসিত প্রশংসা করেন। ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান ইফাদ প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে গিলবার্ট এমন অভিমত পোষণ করেন। কোভিড সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অত্যন্ত উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ৫ জুলাই সোমবার ইফাদ-এর সদর দপ্তরে এ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

রাষ্ট্রদূত আহসান ইফাদ-এর স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে তাঁকে আন্ষ্ঠুানিকভাবে গ্রহণ করার জন্য এবং চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে দারিদ্র ও ক্ষুধা দূরিকরণে বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তার জন্য ইফাদ প্রেসিডেন্ট-কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। ইফাদ-এর ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার জন্য গিলবার্ট হুংবো-কে রাষ্ট্রদূত অভিনন্দন জানান। গ্রামীন অঞ্চল ও প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য প্রেসিডেন্ট হুংবো যেসব প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা অব্যাহত রাখার জন্য তাঁর এ পুননিয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন। তিনি কোভিড সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যেও রেকর্ড পরিমান ১.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল গঠনে ইফাদ প্রেসিডেন্টের গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। এর মাধ্যমে ২০২২-২০২৪ মেয়াদে উন্নয়নশীল দেশগুলো ইফাদ থেকে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান ও ঋণ সহায়তা গ্রহণে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোতে ঋণ ব্যবহারের সামর্থ্য ও সক্ষমতার বিবেচনায় ইফাদের মূল তহবিল (Core Fund) থেকে ঋণ সহায়তা গ্রহণের পাশাপাশি অন্যান্য তহবিল যেমন: ধারকৃত সম্পদ (Borrowed Resource), ক্লাইমেট ফান্ড, বেসরকারি তহবিল থেকেও প্রয়োজনীতার নিরিখে নমনীয় শর্তে না হলেও সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারে। বাংলাদেশের এ সক্ষমতা অর্জন বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে ইফাদ প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন।
এছাড়া, তিনি ইফাদ থেকে সর্বোচ্চ উন্নয়ন সহায়তা গ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথম সারির দেশ হওয়ার পাশাপাশি ইফাদ-এর নির্বাহী পর্ষদে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী গুটি কয়েক দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে অন্যতম বলে অভিহিত করেন।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘উন্নয়ন অভিযাত্রা’-র কথা বলতে গিয়ে কৃষি ও দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনুকরণীয় সাফল্য তুলে ধরেন-যা বৈশ্বিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রান্তিক মানুষের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বলে রাষ্ট্রদূত ইফাদ প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন।

রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ইফাদ-এর তহবিল থেকে ঋণ গ্রহণের বিভিন্ন আনুষঙ্গিক ও প্রায়োগিক বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/অংশীজন (Stake-holder)-এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার পরামর্শ প্রদান করেন। ইফাদ আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশকে এর অষ্টম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলার মত সেক্টরাল চাহিদার নিরিখে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করতে পারে মর্মে রাষ্ট্রদূত অভিমত ব্যক্ত করেন। তাছাড়া, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ-পরবর্তী কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদানের জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের ইকনমিক কাউন্সেলর ও রোমভিত্তিক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের বিকল্প স্থায়ী প্রতিনিধি মানস মিত্র এবং ইফাদ থেকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post হেফাজত নেতাদের মুক্তির আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দাবি বাবুনগরীর
Next post ফিলিস্তিনিদের নিয়ে বিতর্কিত আইন পাসে ব্যর্থ বেনেট
Close