Read Time:7 Minute, 16 Second

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নিউইয়র্কের যৌথ উদ্যোগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২১ উদযাপিত হয়েছে। দুই পর্বে ভাগ করে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট স্বস্ব কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিবসটির কর্মসূচি শুরু করে। এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এদিনের আয়োজনের মধ্যে আরও ছিল দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, মুক্ত আলোচনা এবং জন্মদিনের কেক কাটা পর্ব। স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এবং কনস্যুলেট জেনারেলের অডিটোরিয়ামে আলাদা আলাদাভাবে আয়োজিত সকালের পর্বে জাতির পিতা ও তার পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

বিকালে স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেটের যৌথ উদ্যোগে শিশুদের অংশ- গ্রহণের মাধ্যমে ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠিত হয় শিশু আনন্দমেলা। এতে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশী শিশুদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপস্থাপন এবং ‘নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্যে পত্রলিখন’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

বিজয়ীদের ভাষণ উপস্থাপনের ভিডিয়ো ও পত্র ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়। শিশুদের অংশগ্রহণে “শুনো একটি মুজিবের কন্ঠে” সমবেত সঙ্গীত, কবিতা পাঠ ও নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজনে মুগ্ধ হন দর্শকগণ। অনুষ্ঠানটির র্যাফেল ড্র পর্ব অংশগ্রহণকারী শিশুদের বাড়তি আনন্দ এনে দেয়।

বিকালের এই ভার্চুয়াল আয়োজনে জাতির পিতার জন্ম থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার অবদানের উপর একটি শিশুতোষ গ্রাফিক্স ভিডিয়ো প্রদর্শন করা হয়।

সকালের আলোচনা পর্ব এবং বিকালের ‘শিশু আনন্দমেলা’ উভয় পর্বেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। এছাড়া শিশুদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক এর কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেছা।

স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলার স্বাধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে জাতির পিতা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের উপহার দিয়েছেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শ্লোগান “মুজিববর্ষের কূটনীতি, প্রগতি ও সম্প্রীতি” এবং এবছর জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য “বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর জীবন হোক রঙ্গিন” উদ্ধৃত করেন তিনি।

জাতির পিতা শিশুদের কতটা গভীরভাবে ভালোবাসতেন, শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তিনি তার সাড়ে তিন বছরের সরকারে যে সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে গেছেন যা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে জাতির পিতার সংগ্রামী জীবন সম্বন্ধে অবহিত করা এবং শিশুকাল থেকেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য অভিভাবকসহ সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেকের বাড়িই একটি স্কুল, এবং আমরা আমাদের শিশুদের শিক্ষক। শিশুদেরকে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্বন্ধে জানানো আমাদেরই দায়িত্ব।

স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট আয়োজিত জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আয়োজনে নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুরা জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ উপস্থাপন এবং বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে যে গভীরতা, অধ্যয়ন, পরিশীলন ও স্বতঃ:স্ফুর্ততা দেখিয়েছে তা সত্যিই বিস্ময়কর মর্মে মন্তব্য করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি শিশুদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর লেখা একটি চিঠি পাঠ করে শোনান।

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেছা বলেন, বঙ্গবন্ধুর মানব দরদী ও নির্ভীক শৈশবের ইতিহাস, তার মেধা ও প্রজ্ঞা এবং তার জীবনের আদর্শ আমাদের শিশু-কিশোরদেরকে অনুপ্রাণিত করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে। তিনি জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ব্র্যাডের বিরুদ্ধে নির্যাতনের প্রমাণ জমা দিলেন জোলি
Next post মওদুদকে হারিয়ে আমরা শূন্যতা অনুভব করছি: ফখরুল
Close