বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের একজন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
‘বীর উত্তম’ মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেওয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত থাকা এবং রাজাকারদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনসহ নানা অভিযোগ।
তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর করা বা না করা নির্ভর করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর।
জামুকার সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ওই হত্যাকাণ্ডে মদদ দেওয়ার কারণে জিয়াউর রহমানের খেতাবও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
তিনি জানান, তাদের এসব সিদ্ধান্ত এখন মন্ত্রণালয়ে যাবে। তবে এটি গ্রহণ করা বা না করার ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের আছে।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার জন্য পাওয়া খেতাব পরবর্তীতে বাতিলের সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের শাহাজান খান বলেন, একটা কমিটি এ নিয়ে কাজ করবে এবং তারাই এ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে।
জামুকার এ সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘জামুকা যে প্রস্তাব এনেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় তা হলে এটা হবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অবমাননার শামিল।’
ড. মোশাররফ বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ২৬শে মার্চ ১৯৭১ তারিখ সকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করেছেন ও কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন। দেশে বিদেশে সবার তা জানা। কেউ তা অস্বীকার করতে পারবে না। তিনি প্রথম সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেন এবং পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।’
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার এবং জেড ফোর্সেরও কমান্ডার ছিলেন। এখন ৫০ বছর পর যদি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াকে অস্বীকার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে তা দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদক হিসেবে ৬৮ জনকে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেওয়া হয়েছিল। এ তালিকায় তিন নম্বরে ছিল জিয়াউর রহমানের নাম।
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
