যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম পি. বার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি এমন পর্যায়ের জালিয়াতির কিছু দেখেননি যার কারণে ভোটের ফল পাল্টে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিচার বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ (ভোট জালিয়াতির) অভিযোগ তদন্ত করেছে। আমরা এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ পাইনি।’ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এসব কথা জানিয়েছে।
ভোটের পর যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলদেরকে ভোট সার্টিফাই (প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী সরকারিভাবে ফল প্রকাশ) করার আগ পর্যন্ত জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। উইলিয়াম পি. বার মঙ্গলবার এপিকে জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচনে অনিয়ম তদন্তের কাজ পর্যবেক্ষণের জন্য একজন প্রবীণ আইনজীবীও নিয়োগ দিয়েছেন।
উইলিয়াম পি. বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খুব ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের জবাবে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার দলের আইনজীবী রুডি গিলিয়ানি ও জেনা এলিস যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে বলছি, পদ্ধতিগত ভোট জালিয়াতির প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তদন্তের কোনোকিছু না জেনেই তিনি মন্তব্য করেছেন বলে মনে হচ্ছে।’
অন্যদিকে উইলিয়াম পি. বারের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর চাক শুমার বলেছেন, ‘আমার ধারণা, বরখাস্তের তালিকায় পরবর্তী ব্যক্তি হতে যাচ্ছেন তিনি।’
ভোটের ফল পরিবর্তনের আশায় ট্রাম্প যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তার দরজা বন্ধ করে দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তবে তাঁর এই বক্তব্যে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ প্রেসিডেন্টের আইনজীবীরা এখন পর্যন্ত কোনো মামলায়ই ভোট জালিয়াতির তথ্যপ্রমাণ হাজির করতে পারেননি বলে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর সমর্থকরা ভোটের পর থেকেই জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আসছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তি উইলিয়াম বার। যদিও ইদানীং তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না ট্রাম্পের। সম্প্রতি ট্রাম্প হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, ভোট জালিয়াতির বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে উইলিয়াম পি. বার তাঁকে সহযোগিতা করছেন না।
৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ৩০৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট নিয়ে জয় পেয়েছেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২টি ইলেকটোরাল ভোট। প্রেসিডেন্ট হতে হলে মোট ৫৩৮ ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ২৭০টি পেতে হয়। সেখানে বাইডেন বেশ এগিয়ে রয়েছেন।
কিন্তু ভোটের পর থেকেই নির্বাচনে অনিয়ম ও ডাকযোগের ভোট বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন ট্রাম্প। ১৪ ডিসেম্বর ইলেকটোরাল কলেজ সদস্যদের মতামত দেওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ হবে। নানা অভিযোগ তুলে আসলেও ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইলেকটোরাল সদস্যরা বাইডেনকে বিজয়ী করলে তিনি হোয়াইট হাউস ছেড়ে দেবেন।
More Stories
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে কাজ করবে ভারতীয় আমেরিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালাবে ভারতীয় আমেরিকানরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে...
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। শুক্রবার...
হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ট্রাম্প ২১০, কমলা ১১৩
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কে জয় পেতে যাচ্ছেন, এমন পূর্বাভাসও আসছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে। অ্যাসোসিয়েটেড...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস
ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর ধীরে ধীরে ফলাফল আসতে শুরু করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো...
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের
রাশিয়াসহ ‘প্রতিপক্ষ’ দেশগুলো বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের দাবি, তারা নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা...