সিরিয়ায় গিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আইসিস’ বা ‘আইএসআইএস’এ যোগ দেয়া দুই ভাইকে আর্থিক সহায়তা তথা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কাজে মদদ দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন পেনসিলভেনিয়ার আপারডারবিতে বসবাসরত বাংলাদেশি দম্পতি শহিদুল গাফ্ফার বাবু (৪০) ও নাবিলা খান (৩৫)। তারা ম্যারিল্যান্ড স্টেটের বাল্টিমোর থেকে কয়েক বছর আগে ফিলাডেলফিয়ায় বসতি গড়েছেন। ‘দেশি ভিলেজ’,‘ নিউ দেশি ভিলেজ’ নামক রেস্টুরেন্ট ব্যবসা রয়েছে এই দম্পতির। তারা সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং পারিবারিক অনুষ্ঠানে ক্যাটারিংয়ের কাজও করেন। বগুড়ার সন্তান বাবু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। তবে তার স্ত্রী নাবিলা এখনো গ্রীণকার্ডধারী। তিনি সবসময় হিজাব পরে চলাফেরা করেন।
ধর্মের নামে জঙ্গিবাদে তার পরিবারের সমর্থনের গুঞ্জন আগে থেকেই ছিল। আপারডারবি সিটির কাউন্সিলম্যান শেখ সিদ্দিক জানান, বাবু সপরিবারে এখানকার মন্টগোমারি কাউন্টিতে বাস করছিলেন। রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী হিসেবে কমিউনিটির প্রায় সকলেরই পরিচিত।
যুক্তরাষ্ট্র বিচার বিভাগের মুখপাত্র ১৯ নভেম্বর জানান, ১৮ নভেম্বর তাদেরকে ফিলাডেলফিয়াস্থ ফেডারেল কোর্টে হাজির করা হয়। সে সময়েই জজ যশোয়া ডি উলসোনের এজলাসে উভয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। এ অপরাধে তাদের ৫ বছর করে জেল এবং আড়াই লাখ ডলারের জরিমানা হতে পারে। জেল খেটে মুক্তিলাভের পর আরো তিন বছর বিশেষ নজরদারিতে অতিবাহিত করতে হবে। গত কয়েক বছরে আইসিসে যোগদানকারি ভাই সংক্ষিপ্ত নাম জেকে এবং আইকে-কে তারা বিপুল অর্থ পাঠিছেন। গতবছর আইকে সিরিয়ায় বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।
মামলার বিবরণে প্রকাশ, সন্ত্রাসে সহায়তাকারির মধ্যে বাবুর মায়ের ইন্ধনও রয়েছে। তার সংক্ষিপ্ত নাম ওয়াইপিকে। তিনি বাস করেন সউদি আরবে। মাঝেমধ্যে বাংলাদেশেও যাতায়াত করেন। শুধু তাই নয়, বাবুর জমজবোনেরাও (এনকে) আইএসআইএসকে প্রকাশ্যে সহযোগিতা দিচ্ছেন। তারা থাকেন বাংলাদেশে।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছর মার্চে সন্ত্রাসী হিসেবে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত আইকে ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন স্টুডেন্ট ভিসায়। কলেজে ভর্তি হয়ে ভাই-ভাবির সাথে বসবাস করতেন ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
ইউএস এটর্নি উইলিয়াম এম ম্যাকস্য়োইন বলেন, নাবিলা খানের দুই ভাইকে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসআইএসে যোগ দিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হতে উৎসাহ দিয়েছেন এই দম্পতি।
এফবিআইয়ের ফিলাডেলফিয়া ডিভিশনের স্পেশাল এজেন্ট মাইকেল জে ডরিস্কল এ প্রসঙ্গে প্রদত্ত বিবৃতিতে বলেছেন, এ মামলার মধ্যদিয়ে উদঘাটিত হলো যে সন্ত্রাসীরা নিজ হাতে অস্ত্র-বিস্ফোরক না ধরেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে মারাত্মক ক্ষতির পথ খুঁজে। এই দম্পতি তাদের ভাইদের সেভাবেই ব্যবহার করেছে। মামলার নথি অনুযায়ী নাবিলা খান ভাইদের সিরিয়ায় রওয়ানা দেয়ার সময় বিদায় অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি নিজের কিছু স্বর্ণ বিক্রি করে ভাইকে দেন হাত খরচের জন্যে।
More Stories
বিজয়ের ৫৫ বছরে লস এঞ্জেলেসে কমিউনিটির প্রাপ্তি
- কাজী মশরুল হুদা বিজয়ের ৫৫ বছর হতে চলেছে। প্রায় ২ কোটির মত প্রবাসী বাংলাদেশী বিশ্বজুড়ে বসবাস করছে। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে...
গণঅভ্যুত্থানের সময় আমিরাতে আটক ২৪ বাংলাদেশি মুক্তি পাচ্ছেন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক হওয়া আরও ২৪ বাংলাদেশি নাগরিক মুক্তি পাচ্ছেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর)...
থাইল্যান্ডের ই-ভিসা নিয়ে সতর্কবার্তা দূতাবাসের
বাংলাদেশের কয়েকটি এজেন্সি ২-৩ ঘণ্টায় থাই ই-ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। যা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ রয়েল থাই দূতাবাস।...
মামদানির জয়ের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জারা রহিম
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি। কিন্তু তার এই ঐতিহাসিক বিজয়ের নেপথ্যে ছিলেন...
বাংলাদেশি ও ভারতীয়দের ভিসা গণহারে বাতিলের ক্ষমতা চাইছে কানাডা
কানাডার সরকার বিদেশিদের গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা পাওয়ার চেষ্টা করছে। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভারত ও...
দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে প্রত্যর্পণে কাজ করছে মালয়েশিয়া
বেস্টিনেটের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর এবং তার সহযোগী রুহুল আমিন স্বপনের প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ নিয়ে কাজ...
