Read Time:6 Minute, 21 Second

শান্তিতে অবদান রাখায় এ বছর নোবেল পুরস্কার পেল জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সংঘাত ও যুদ্ধকবলিত এলাকাগুলোতে ক্ষুধা নিরসনে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরুপ প্রতিষ্ঠানটিকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে তারা ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা (১.১ মিলিয়ন ডলার) অর্থ পাবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, আজ শুক্রবার নরওয়ের স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা) দেশটির রাজধানী অসলো থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে এ বছরের নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে।

নোবেল কমিটি বলছে, ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই, শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধ-সংঘাত কবলিত এলাকার পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং যুদ্ধ ও সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহার রোধ করতে চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করছে ডব্লিউএফপি। ক্ষুধার বিরুদ্ধে অব্যাহত লড়াই প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ডব্লিউএফপিকে এবারে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হলো।

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি আরও বলছে, ২০২০ সালের নোবেল বিজয়ী বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি খাদ্য সুরক্ষাকে শান্তির উপকরণ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বহুপাক্ষিক সহযোগিতায় মূল ভূমিকা পালন করেছে। যুদ্ধ ও সংঘাতের অস্ত্র হিসাবে ক্ষুধার ব্যবহারকে মোকাবিলায় জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে একত্রিত করার জন্য জোরালো অবদান রেখেছে।

গত বছর শান্তিতে অবদান রাখায় নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয় ইথিওপিয়ার সংস্কারপন্থী প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদকে। মূলত দুই দশক ধরে প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে চলা যুদ্ধের অবসান ও দেশটির মধ্যে জাতিগত সংঘাত নিরসনের ইথিওপিয়ার আমূল সংস্করের কারিগর হিসেবে তাকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়।

সংগঠন ও সংস্থার মধ্যে সর্বোচ্চ তিনবার (১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩) নোবেল শান্তি পুরস্কার পায় আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রস। এ ছাড়া ১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে শান্তিতে নোবেল পেয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

এ বছর সাহিত্যে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন কবি লুইস গ্লুক। রসায়নে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ফ্রান্সের ইমানুয়েল শরপেনটির ও যুক্তরাষ্ট্রের জেনিফার এ দোনা। ডিএনএ সম্পাদনায় ক্রিসপার বা ক্যাস-৯ নামের নতুন একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য তারা এ পুরস্কার পান। কৃষ্ণ গহ্বর সম্পর্কে নতুন আবিষ্কারের গবেষণায় পদার্থে নোবেল পেয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানী রজার পেনরোস, মার্কিন জ্যোতির্বিদ রেইনহার্ড গেঞ্জেল ও জার্মান পদার্থবিদ আন্দ্রিয়া ঘেজতিন বিজ্ঞানী।

হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কার এবং এর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য মার্কিন বিজ্ঞানী হার্ভে জে আল্টার ও চার্লস এম রাইস এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হাউটন দুই মার্কিন বিজ্ঞানীকে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কিার লাভ করেছেন।

ডিনামাইট আবিষ্কারক, বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে দেওয়া হয় নোবেল পুরস্কার। তিনি ৩ কোটি ১০ লাখ ক্রোনার রেখে গিয়েছিলেন, যা বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রায় ১৮০ কোটি ক্রোনের সমান। তার রেখে যাওয়া ওই অর্থ দিয়েই ১৯০১ সাল থেকে মর্যাদাপূর্ণ এ নোবেল পুরস্কারের প্রচলন করা হয়। এতদিন এ নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য ছিল ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার।

আলফ্রেড নোবেলের উপার্জিত অর্থ দিয়ে ১৯০১ সালে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে গোড়াপত্তন ঘটে। ১৯৬৮ সালে এ তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। আগামী ১২ অক্টোবর অর্থনীতিতে এ বছরের নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।

পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা এবং অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী বা বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স। দ্য রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি থেকে সাহিত্য এবং নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কিংবা বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post জনবিস্ফোরণের আগে সরকারকে বিদায় নিতে বললেন ভিপি নুর
Next post ফোনে ১৩৭৩টি অশ্লীল ভিডিও, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশির কারাদণ্ড
Close