জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের সভাপতি তিজানি মোহাম্মদ-বান্দের আহ্বানে ও সভাপতিত্বে ১০ সেপ্টেম্বর বৃহস্প্রতিবার অনুষ্ঠিত হল বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশীপ রেজুলেশন “শান্তির সংস্কৃতি” এর উপর সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের বার্ষিক ফোরাম।
কোভিড-১৯ জণিত কারণে ভার্চুয়ালে অনুষ্ঠিত এ ফোরামে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ, সদস্য দেশসমূহের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবর্গ বক্তব্য রাখেন।
ইভেন্টটির এবারের থিম ছিল-“শান্তির সংস্কৃতি: কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে নতুন বিশ্ব বিনির্মাণ’’ (The Culture of Peace: Change our world for the better in the age of COVID-19)।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি উপস্থাপন এবং সর্বসম্মতিক্রমে তা রেজুলেশন হিসেবে গৃহীত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা প্রদত্ত বক্তব্যে তুলে ধরেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো জাতির পিতা প্রদত্ত ভাষণের অংশবিশেষ -“মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার। এই শান্তির মধ্যে সারাবিশ্বের সকল নর-নারীর গভীর আশা আকাঙ্ক্ষা মূর্ত হয়ে রয়েছে” -অংশটি উদ্ধৃত্ত করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা আরও বলেন, জাতির পিতার এই কালজয়ী বক্তব্য ও আদর্শ থেকেই উদ্ভূত হয়েছে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবিচল প্রতিশ্রুতি যা আমাদেরকে শান্তির সংস্কৃতির প্রসারে অনুপ্রাণিত করছে।
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশেষ করে মহামারিকালে শান্তির সংস্কৃতির প্রাসঙ্গিকতার কথাও তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি বলেন, এই মহামারির সময়েও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের অনেক উদ্যোগে ছিল শান্তির সংস্কৃতির অনুরণন। এই মহামারি কাটিয়ে তুলতে বৈশ্বিক একাত্মতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টায় পরিপূরক হিসেবে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটিকে সন্নিবেশন করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
পরে, যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা থিংকট্যাঙ্ক ‘ইন্টারন্যাশনাল পিস ইনস্টিটিউট’ (আইপিআই) আয়োজিত “শিক্ষা, কোভিড -১৯ এবং শান্তির সংস্কৃতি” শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এই ইভেন্টেও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি তিজানি মোহাম্মদ-বান্দে। সাইড ইভেন্টটির বক্তব্যে শিশুদের উপর বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোভিড-১৯ এর মারাত্মক প্রভাব সম্পর্কে আলোকপাত করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। মহামারিটি যাতে প্রজন্মের সঙ্কটে পরিণত না হয় সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। করোনা মহামরিতে শিক্ষাখাতে সৃষ্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় মোকাবিলায় শান্তির সংস্কৃতি অনুসরণের আহ্বান জানান তিনি। মহামারি চলাকালীন শিক্ষা ও বিদ্যার্জনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এতে প্যানেলিস্টগণের মধ্যে ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও রাষ্ট্র্রদূত আনোয়ার-উল করিম চৌধুরীসহ ইউনিসেফ এবং ইউনেস্কোর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ।
More Stories
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
ভারতে হাসিনার অবস্থান নিয়ে জয়শঙ্কর বললেন— সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান করা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী...
কেউ যেন আমাদের ওপর কোনো দাদাগিরি করতে না আসে: ডা. শফিকুর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ভয় করি শুধু আল্লাহ তায়ালাকে। বাকি যাদের কথা বলেন, তাদেরকে আমরা...
পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে যাবে: প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে আরও এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয়...
ছাত্রশক্তির নেত্রী জেদনীকে বিয়ে করলেন এনসিপির হান্নান মাসউদ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বিয়ে করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামলী...
