পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জ্যাকব ব্লেকের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় ফের উত্তপ্ত যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের বর্ণবিরোধী বিক্ষোভ নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
অঙ্গরাজ্যটির কোনাশা শহরে এ ঘটনার পর বিক্ষোভ ও সহিংসতায় নিহত হয়েছেন আরও তিন ব্যক্তি, যার মধ্যে একজন ট্রাম্প সমর্থক।
ডয়চে ভেলে অনলাইন জানায়, এর মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনাশা সফর করেন। ব্লেকের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করে তিনি বিক্ষোভে ক্ষতিগ্রস্ত ও পুলিশের পাশে দাঁড়ান।
উইসকনসিনের ডেমোক্র্যাট গভর্নর টনি এভার্স বারবার তাকে এই সময় কেনোশা আসতে নিষেধ করেছিলেন। টনি এভার্স বলেছিলেন, ট্রাম্প এই সময় কেনোশা সফর করলে উত্তেজনা বাড়বে, পরিস্থিতি খারাপ হবে।
কিন্তু ট্রাম্প সেই অনুরোধে কান না দিয়ে কেনোশায় সফর করেন। সেখানে পুলিশের সাতটি গুলি খেয়ে গুরুতর আহত ব্লেককে তিনি দেখতে যাননি, বরং সেখানে গিয়ে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান এবং ডেমোক্র্যাটদের কড়া সমালোচনা করেন।
পুলিশের পরপর সাতটি গুলিতে ব্লেকের মেরুদণ্ড কয়েক টুকরো হয়ে যায়। অস্ত্রোপচার হলেও এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক স্বাভাবিকভাবে হাঁটা চলা করতে পারবেন না। তিনি পঙ্গু হয়ে গেছেন বলে ব্লেকের আইনজীবী বেন ক্রাম্প জানিয়েছেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেনোশায় মুখোমুখি ‘ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটারস’ ও ট্রাম্পের সমর্থকেরা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প এই বিভাজনকে আরও বাড়াতে উসকানি দিচ্ছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
কেনোশায় বিমানবন্দর থেকে শহরে আসার পথে সমর্থকেরা ট্রাম্পকে স্বাগত জানায়। আর বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানায়। ট্রাম্প সোজা চলে গেছেন সেই এলাকায় যেখানে প্রচুর দোকান ভাঙচুর হয়েছে, আগুন ধরানো হয়েছে। তিনি একশ বছর পুরোনো আসবাবপত্রের দোকানের মালিকের সঙ্গে কথা বলেন। সবকিছু দেখে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা মোটেই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের নমুনা নয়।’
বিক্ষোভের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, ট্রাম্প তাদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের ৪০ লাখ ডলার এবং পুলিশকে ১০ লাখ ডলার দেন। আর সেই সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের তীব্র সমালোচনা করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফেডারেল বাহিনী পাঠানো নিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘ওরা ফোন করা পছন্দ করেন না। ওরা আদেশ দেয়া পছন্দ করেন।’ ট্রাম্প এটা বুঝিয়ে দিতে ভোলেননি, যা হয়েছে, তার পেছনে ডেমোক্র্যাটদের দায় রয়েছে।
নিজেকে আইনশৃঙ্খলার রক্ষাকর্তা হিসেবে তুলে ধরতে কোনাশায় ট্রাম্পের এ সফর। এটিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রচারের অন্যতম বিষয় হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তবে প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের অভিযোগ, ‘ ট্রাম্প আলো জ্বালাতে যান না, তিনি উত্তাপ ছড়াতে চান। তিনি আমাদের শহরগুলোতে গন্ডগোল ছড়াতে চান। তিনি সহিংসতা থামাতে পারেন না, কারণ, এতদিন ধরে তিনিই এর জন্ম দিয়েছেন।’
More Stories
বাইডেন বললেন ‘ওয়েলকাম হোম’ ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ নেয়ার আগে তাকে হোয়েইট হাউসে স্বাগত জানান বিদায়ী...
ট্রাম্পের শপথে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি মোদিকে, কারণ কী
আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারই প্রথমবার রীতি ভেঙে কয়েকজন বিশ্বনেতাকে...
লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের উপকূলীয় অভিজাত এলাকায় ভয়াবহ দাবানলে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়েছেন। এই আগুন থেকে বাঁচতে গাড়ি...
১০০ বছর বয়সে মারা গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। স্থানীয় সময় রবিবার জিমি কার্টার সেন্টার এক...
ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশ ঘোষণা করলো যুক্তরাষ্ট্র
ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশের তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক সংস্থা (আইসিই)। এ তালিকায় ভারত ছাড়াও রয়েছে ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান,...
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে কাজ করবে ভারতীয় আমেরিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালাবে ভারতীয় আমেরিকানরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে...