ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালালে রুই-কাতলা বেরিয়ে আসতে পারে, সেই শঙ্কা থেকে অভিযান চালানোর আগে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
শুক্রবার (৭ আগস্ট) এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। ভিডিওটি টিআইবির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে।
গত বুধবার রাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা জারি করা হয় যে, ‘অনুমতি ছাড়া সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে অভিযান পরিচালনা করা যাবে না। কোথাও কোনো হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।’
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ’সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনার আগে অনুমতি নিতে হবে, এই যে নির্দেশনা, এটি যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এর পেছনে একাধিক উপাদান কাজ করে থাকতে পারে। প্রথম কথা, যদি পূর্বানুমতি লাগবে বলে আমরা ধরেও নেই তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তো একটা নির্দেশনার মাধ্যমেই বলে দেওয়া যায়-কার্যকরভাবে অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং আইনের অপব্যবহার না করে।’
‘সেটি না করে প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুমোদন লাগবে, এর অর্থ হচ্ছে- একদিক থেকে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ছিলেন, তারা ভেবেছেন বা তাদের একাংশ মনে করেছেন চুনোপুঁটি টানাটানি করলে রুই-কাতলা বেরিয়ে আসতে পারে, যা তাদের একাংশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে যোগসাজশের কারণে হোক বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ যে কারণেই হোক, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হতে পারে।’
‘দ্বিতীয় যে উপাদানটি কাজ করতে পারে সেটি হচ্ছে, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রভাব সৃষ্টি করেছিলেন, যেটি দেশবাসী জানেন। তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস নেই যে তারা তাদের দায়িত্ব স্বচ্ছতার সঙ্গে, নৈতিকতার সঙ্গে দুর্নীতিমুক্ত হয়ে পরিচালনা করতে পারেন। যদি তাই হতো তাহলে তো পূর্বানুমতির বিষয়টি লাগার কথা নয়।’
‘অভিযান শব্দটি নিয়ে তাদের তো শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না, যদি সততার সঙ্গে, জবাবদিহির সঙ্গে আমি কাজ করি।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তৃতীয় যে বিষয়টি এখানে হতবাক করার মতো সেটি হচ্ছে- সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিন্তু প্রকারান্তরে বলে দিচ্ছে, আর এটা হচ্ছে-আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার না করে দমন করতে পারবে। এ ধরনের আস্থা মন্ত্রণালয়ের নেই। যেটি আবার অবশ্যই দেশবাসীর একাংশের মধ্যেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সম্পর্কে আছে। তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে আস্থাহীনতার সংকট রয়েছেই, যেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। সেটি কিন্তু সরকার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখন সিল দিয়ে বলে দিল।’
‘যাই হোক না কেন, এ সিদ্ধান্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অনিয়ন্ত্রিত নীতির চিত্র প্রকাশের যে সুযোগটি সৃষ্টি হয়েছিল দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে, সেটিকে প্রতিহত করার অন্যতম উপায় ছাড়া অন্য কিছু হিসেবে ভাবাটা খুবই কঠিন’,- বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
More Stories
‘আ.লীগ আমলে প্রতি বছর পাচার হয়েছে ১৫ বিলিয়ন ডলার’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ টানা প্রায়...
ছাত্র-জনতার বীরত্বকে ব্যর্থ করার চেষ্টা হচ্ছে: সলিমুল্লাহ খান
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বীরত্বকে স্মরণ করে লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, তরুণসমাজ যে সাহস করেছেন এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের...
সেন্টমার্টিন লিজ দেয়ার বিষয়ে যা জানালো প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন লিজ দিচ্ছেন, এমন তথ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে কোনো দেশের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেয়ার পরিকল্পনা নেই...
‘রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে, আমরা কারা’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয়। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার আমরা কারা? এ বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত...
সাধারণ সৈনিকেরা গুলি করতে অস্বীকার করেছিল বলেই গণ-অভ্যুত্থান সফল হয়েছে: ফরহাদ মজহার
সাধারণ সৈনিকেরা গুলি করতে অস্বীকার করেছিল বলে এই গণ-অভ্যুত্থান সফল হয়েছে। ফলে সৈনিকদের অভিপ্রায়, যারা শ্রমিকের সন্তান, যারা কৃষকের সন্তান...
আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই: ভিপি নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এখন আমরা একটি...