পঁচাত্তর বছর আগে এই দিনটিতেই জাপানের হিরোশিমা শহরে ফেলা হয়েছিল বিশ্বের প্রথম পরমাণু বোমা। যার ফলে মারা গিয়েছিলেন এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ। হিরোশিমা দিবসে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ডাক দিয়েছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। খবর ডয়চে ভেলের।
হিরোশিমায় তখন সকাল আটটা বেজে ১৫ মিনিট। মার্কিন বিমান বি ২৯ থেকে নেমে এল ‘লিটল বয়’, বিশ্বের প্রথম পরমাণু বোমা। যার তাণ্ডবে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান ৮০ হাজার মানুষ। পরে মারা যান আরও ৬০ হাজার। পরমাণু বোমার প্রতিক্রিয়ায় দীর্ঘদিন পর্যন্ত তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হয়েছেন সধারণ মানুষ।
সেই অমানবিক ঘটনার ৭৫ বছর পূর্তিতে হিরোশিমায় সমবেত হয়েছিলেন কিছু বেঁচে যাওয়া মানুষ, মৃতদের পরিবারের লোক, বিদেশি প্রতিনিধি, শহরের বর্তমান লোক ও কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা। করোনার কারণে এবার অনেক কম লোক সমবেত হয়েছিলেন। তারা শান্তির গান গাইলেন, প্রার্থনা করলেন এবং শান্তির কথা বললেন। তাদের একটাই আবেদন, সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করা হোক। সব দেশ যেন তাদের পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলে।
হিরোশিমা শান্তি স্মারক বা পিস মেমোরিয়ালে স্থানীয় সময় ৮টা ১৫ মিনিটে গান, কথা সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। নীরব থেকে স্মরণ করা হয় তাদের, যারা ৭৫ বছর আগে মারা গেছিলেন পরমাণু বোমার বিস্ফোরণে।
শুধু হিরোশিমা নয়, শান্তি ও পরমাণু অস্ত্র ধ্বংসের দাবি উঠেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং জাতি সংঘের তরফ থেকেও। ভিডিওবার্তায় জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘যারা সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন, তাদের গল্প, কষ্ট ও সহনশীলতা যেন পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্বর জন্য আমাদের একজোট করে।’
হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমণু বোমা ফেলার পরেও আজ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ক্ষমা চায়নি। তারা বরাবর বলে এসেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দ্রুত শেষ করার ওই একটাই পথ ছিল। প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করতে থাকলে লড়াই দীর্ঘস্থায়ী হতো।
হিরোশিমার তিনদিন পর পরমাণু বোমা ফেলা হয় নাগাসাকিতে। ১৯৪৫ সালে সেই বোমার প্রভাবে নাগাসাকিতে মারা গেছিলেন ৭৪ হাজার মানুষ। তার কয়েকদিন পর ১৫ অগাস্ট, ১৯৪৫ সালে জাপান আত্মসমর্পণ করে।
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই বলেছেন, ‘জাপান সরকারকে অনুরোধ করছি, তারা যেন পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করে ও তা অনুমোদন করে। জাপানই একমাত্র দেশ, যারা পরমাণু বোমার শিকার। তাই বিশ্বের লোককে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ভয়াবহতার কথা বোঝানোর একটা দায় আছে।’
জার্মানিসহ বিশ্বের বহু দেশই ২০১৭ সালের এই চুক্তিতে সই করেছে। কিন্তু জাপান করেনি। জাপানে এখনো ৫০ হাজার মার্কিন সেনা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু-ছাতার তলায় জাপান আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানকে সেনাবাহিনী রাখতে দেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিবেশী পরমাণু অস্ত্রধর চীনের থেকে বাঁচার জন্যও জাপান পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল।
More Stories
শেখ হাসিনার পতনে কর্তৃত্ব হারাচ্ছে ভারত: শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ানের নিবন্ধ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এই মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। গণমাধ্যমসহ সব...
ভিসা ফি ছাড়াই বাংলাদেশিরা যেভাবে পাকিস্তানে যাতায়াত করতে পারবে
বাংলাদেশের নাগরিকরা ভিসা ফি ছাড়াই পাকিস্তানে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আহমদ মারুফ। তিনি বলেছেন, দুই সপ্তাহ...
মোটা অঙ্কের টাকায় ‘বাংলাদেশের প্রভাবশালীরা’ আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতে: আনন্দবাজারের প্রতিবেদন
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী...
ড. ইউনূসকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বুধবার (১৪...
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন: হাসিনার ওপর চাপ কমাতে পশ্চিমাদের কাছে ভারতের ‘লবিং’
ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর চাপ প্রয়োগ বন্ধ করতে পশ্চিমা দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিল ভারত।...
শেখ হাসিনার অনুরোধেই ভারতে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে: জয়শঙ্কর
বাংলাদেশের সদ্য পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধের ভিত্তিতেই বহনকারী বিমানকে ভারতে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস...