যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীর আশ্রয় মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতে যাচ্ছে দেশটির বিচার বিভাগ। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে অবস্থান করছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্যতম এই আসামি।
মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার এই মামলা আবার চালু করেছেন বলে দেশটির রাজনীতিবিষয়ক ওয়েবপোর্টাল পলিটিকো’র বিশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত মাসে উইলিয়াম বার অনেকটা গোপনে বহুল আলোচিত এই মামলাটি পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রায় ১৫ বছর আগে নিষ্পত্তি হওয়া এই মামলা এখন আবার চালু করে রাশেদ চৌধুরীকে ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে চায় বলে পত্রিকাটির দাবি।
এই প্রক্রিয়ার শুরুর হওয়ায় শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের সুযোগ হারাতে পারেন বঙ্গবন্ধুর এই খুনি। বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হবে।
এদিকে দীর্ঘ ১৪ বছর পর ওই ফাইল পুনরায় পর্যালোচনার বিষয়ে রাশেদ চৌধুরীর আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডার হোট শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসন এ পদক্ষেপ নিয়েছে। তার ভাষ্য, ‘দীর্ঘদিন আগে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়া একটি আবেদনকে পুনরায় সামনে আনার ঘটনায় অন্য অ্যাসাইলাম প্রার্থীর মধ্যে ভীতির সঞ্চার ঘটছে।’
যদিও এ বিষয়ে এখনো সেখানে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মার্কিন প্রশাসনের কারো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত কয়েক বছর ধরে দফায় দফায় যুক্তরাষ্ট্রে কাছে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চেয়ে আসছে বাংলাদেশ। এরপর গত মাস থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। ১৭ জুন ‘বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিল‘কে রাশেদের মামলাটি তার কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন অ্যাটর্নি জেনারেল বার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পর ১৯৯৮ সালে নিম্ন আদালত অন্য আসামিদের সঙ্গে পলাতক অবস্থায় রাশেদ চৌধুরীকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অবশ্য এর আগেই ১৯৯৬ সালে ভ্রমণ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন তিনি।
২০০৯ সালে উচ্চ আদালত ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের রায় কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যদের দণ্ড কার্যকর হয়নি।
১৯৬৯ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন রাশেদ চৌধুরী। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরের বছর ১৯৭৬ সালে তাকে সৌদি আরবের জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ মিশনে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে নাইরোবি, কুয়ালালামপুর ও ব্রাসিলিয়া দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরপরই তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
More Stories
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের ‘যুদ্ধ সরঞ্জাম’ কিনবে সৌদি আরব
ক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব। হোয়াইট হাউস এই চুক্তিটিকে ‘ইতিহাসের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা চুক্তি’...
ট্রাম্পের কারিশমায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান
টানা কয়েকদিনের হামলা পাল্টা হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। দুই দেশই যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যুদ্ধবিরতিটি তাৎক্ষণিকভাবে...
বাংলাদেশিদের পুনরায় ভিজিট ভিসা দিচ্ছে আরব আমিরাত
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আবারও ভিজিট ভিসা (ভ্রমণ ভিসা) চালু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। রোববার (৪ মে) বাংলাদেশে নিয়োজিত দেশটির রাষ্ট্রদূত...
যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে ভারতীয় ছাত্রদের ভিসা বাতিল, আছে বাংলাদেশিরাও
যুক্তরাষ্ট্রে গত কয়েকদিন ধরে আকস্মিকভাবে শত শত শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারতীয়দের ভিসা বাতিল করা হয়েছে।...
ওষুধ ও প্রযুক্তিপণ্যে শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত ট্রাম্পের, উদ্বেগ বিশ্ববাজারে
জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ওষুধ ও আধুনিক প্রযুক্তিপণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতিতে...
স্মার্টফোনে নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
চীনে তৈরি স্মার্টফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিকস পণ্য শুল্ক থেকে অব্যাহতি পাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি...