চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার চলমান বিরোধসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপড়েনের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে সরকার কাজও শুরু করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) ‘কোভিড-১৯ অ্যান্ড বাংলাদেশ ইকোনমি’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব বলেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত। রপ্তানিসহ নানা খাতে এর তীব্র প্রভাব পড়েছে। তবে চলতি বছরের মধ্যেই করোনা সংকটের অবসান হবে এবং আগামী বছরের শুরুতেই দেশের অর্থনীতি ভালভাবে ঘুরে দাঁড়াবে।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইনটিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) এবং দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ইআরএফ কর্মশালার আয়োজন করে।
ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের গেস্ট অফ অনার বিল্ড-এর চেয়ারম্যান আবুল কাশেম খান ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সামস মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আবু ইউসুফ বক্তৃতা দেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, করোনায় যেমন সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তেমনই অনেক সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। অনেক দেশ এখন পণ্য আমদানিতে চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাচ্ছে। অনেক দেশ চীন থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে অন্য দেশে বিনিয়োগ করার কথা ভাবছে। এ ছাড়া চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বিরোধের কারণেও চীনকে আর ততটা নির্ভরযোগ্য মনে করছে না বিভিন্ন দেশ। এটি আমাদের জন্য বেশ সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দ্রুত নানা উদ্যোগ নিতে হবে। ঢিলেমিতে এসব সম্ভাবনা হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে সে অনুসারে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তিনি জানান।
টিপু মুনশি বলেন, আগামী দিনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ১২টি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। এর মধ্যে ভুটানের সঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে চুক্তি হতে পারে। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা অনেক এগিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, নতুন অর্থবছরে ৪৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং আমরা আশা করি অবশ্যই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। রপ্তানির প্রধান পণ্য পোশাক খাতের পাশাপাশি চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, পাট, হালকা প্রকৌশল এবং আইটি খাতে নতুন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আশা করছি এই বছরের শেষের দিকে আমরা এই মহামারী থেকে মুক্তি পাব এবং সঙ্গে সঙ্গেই সবার সামষ্টিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আবার অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে পারব।
র্যাপিড চেয়ারম্যান ড.আবদুর রাজ্জাক জানান, করোনার কারণে বিশ্ববাণিজ্য ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। পণ্য আমদানিতে অনেক দেশ রক্ষণশীল অবস্থান নিতে পারে। এ ছাড়া করোনা পরবর্তীকালে অনেক দিন পর্যন্ত পর্যটন বা মানুষের চলাচল সীমিত থাকতে পারে। তাতে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্যসহ অনেক পণ্যের চাহিদা কমে যেতে পারে। এমন অবস্থায় রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে।
More Stories
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর
চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের আরেক মামলাতেও সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান...
শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়ার মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসা প্রদানের আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রতি বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসা প্রদান করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা প্রয়োজন অনুযায়ী...
আবারও বাংলাদেশকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর
বাংলাদেশে কিছুই নেই। পুরো দেশ ভারতের উপর নির্ভরশীল। ওই দেশে দরিদ্র মানুষ এতো বেশি যার কিছু দরিদ্র এখানে (ভারতে) পাঠানো...
শেখ হাসিনার এপিএস লিকুর ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন, ৪ মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব–২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর নামে পৃথক ৪ টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন...
‘তেল মারা’ বন্ধ করুন: সরকারি কর্মকর্তাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সরকারি কর্মকর্তাদের ‘তেল মারা’ বন্ধ করতে হবে—এমন মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, “ভবিষ্যতে যারা...
চলতি বছরেই নির্বাচন জরুরি, ইইউকে খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে চলতি বছরেই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি...