বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্ধারিত ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন আজ বৃহস্পতিবার শেষ হলেও করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না পর্যন্ত তিনি ‘হোম কোয়ারেন্টিনেই’ থাকবেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুঠোফোনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এখন সারা বিশ্বের যে অবস্থা এবং সারা দেশে এখন লকডাউনের মতো হয়ে গেছে-এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তো ১০০% তাকে (খালেদা জিয়া) কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। সেখানে উনি সেইফ আছেন। এখন উনি সম্পূর্ণ হোম কোয়ারেন্টিন পরিবেশেই থাকবেন। আমরা আশা করি, এর মধ্যে উনি ভালো থাকবেন। যখন এই সমস্যাটা (করোনাভাইরাস) কমবে তখনই পরবর্তী অবস্থার কথা আমরা চিন্তা করব।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম যথেষ্ট অসুস্থ। এখনো ইনফ্যাক্ট ইম্প্রুভমেন্ট উনার অসুখের খুব বেশি হয় নাই। একটা মূল বিষয় ছিলো যে, তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া আমাদের দাবিটা ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা বলেছেন যে, দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না। দেশের অভ্যন্তরে চিকিৎসা সেবার যে অবস্থাটা তাতে করে তো সব ডাক্তাররাও সার্ভিস দিতে পারছেন না। যতটুকু পারছেন তার যে ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আছেন তারা তাকে দেখেছেন এবং একটা চিকিৎসা দিয়েছেন। আমরা আশা করি যে, এর মধ্যে উনি ভালো থাকবেন।’
ডা. জোবাইদার তত্ত্বাবধায়নেই চিকিৎসা
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসার সব কিছু লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধায়ন করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার উনার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে। এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন।’
৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা রোগে ভুগছেন।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময়ে ধরে নির্জন কারাবাস এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়া কারণে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ পর্য়ায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। হাত-পায়ে আর্থারাইটিজের প্রচণ্ড ব্যথার কারণে উনি ভীষন কষ্ট পাচ্ছেন। এই ব্যাথা উপশমের ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে। উনার (খালেদা জিয়া) ডায়েবেটিস এখনো যথাযর্থ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উনাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলতে দীর্ঘ এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।’
গত ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে ৬ মাস সাজা স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় সরকার। সেদিন বিকেল ৫ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের থেকে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় আসেন।
‘ফিরোজা’র দোতলায় খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন রয়েছেন। এই ১৪ দিন কেউ নিচে নামেননি বলে জানান তার ব্যক্তিগত এক চিকিৎসক।
‘ফিরোজা’য় গেইটে পাহারারত নিরাপত্তা কর্মীরা বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) বাসায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র চিকিৎসক টিমের সদস্যবৃন্দ ও কয়েকজন নিকট আত্বীয় স্বজন আসছেন।’
More Stories
তারেক রহমান চাইলে যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসতে কোনো অসুবিধা নেই। উনি বাংলাদেশের নাগরিক,...
আল্লাহ আছেন, সবাইকে একদিন তার কাছে জবাব দিতে হবে : আইন উপদেষ্টা
আল্লাহ আছেন, সবাইকে একদিন সবকিছুর জন্য তার কাছে জবাব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ...
প্রধান উপদেষ্টার শোক: ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
ভারতের আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১২ জুন)...
রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে এক ব্যক্তিগত...
দুবাইয়ে মেয়ের ৪৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট, যা বললেন গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি এক বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন। প্রবাসী কন্যার নামে দুবাইতে ৪৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট...
আওয়ামী লীগকে কি রাজনৈতিক দল বলা যায়, প্রশ্ন ড. ইউনূসের
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল বলা যায় কি-না’, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। একই সঙ্গে...