Read Time:5 Minute, 3 Second

অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফিরে আসার জন্য মালয়েশিয়ার সরকার ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সময় বেধে দিয়েছিল সেটি পার হবার পর অনেক বাংলাদেশী সেখানে বিপাকে পড়েছেন।

এরই মধ্যে ১ জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়া পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২২৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে ৭৮ জন বাংলাদেশি রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

অনেক বাংলাদেশী এখন সেখানে গ্রেফতার আতঙ্কে আছেন।

অনেকে কেন ফিরতে পারেনি?
অবৈধ বিদেশীদের দেশে ফিরে যাবার জন্য মালয়েশিয়ার সরকার যে সুযোগ দিয়েছে সে অনুযায়ী দেশে ফেরার টিকিট এবং মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র – এ দুটি জিনিস লাগবে।

ইমিগ্রেশনের ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হলে সাথে বিমানের টিকিটও দিতে হয়। এছাড়া জরিমানা হিসেবে ৭০০ রিঙ্গিত অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। অবৈধভাবে বসবাস করা বহু বাংলাদেশী অর্থ সংকটের কারণে সেটি করতে পারেননি।

আবার যারা বিমানের টিকিট জোগাড় করেছেন তারাও মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পাননি।

কারণ এজন্য ইমিগ্রেশন অফিসে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মালয়েশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন আহমেদুল কবির, যিনি সাংবাদিকতার সাথেও জড়িত।

তিনি বলেন, “ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ১১ টি প্রদেশে ৮০টি কাউন্টার করেছিল। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ স্পেশাল পাস ইস্যু করেছে। প্রতিদিন হাজার-হাজার অবৈধ অভিবাসী স্পেশাল পাস নেবার জন্য কাউন্টারে ভিড় করেছে।”

“অনেকে টাকার অভাবে টিকিট করতে পারেননি। আবার অনেকে টিকিট করলেও স্পেশাল পাস নিতে পারেননি,” বলছিলেন কবির।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ডিসেম্বর মাসের শেষ দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ বিমান মালয়েশিয়া থেকে প্রতিদিন অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

একজন অবৈধ অভিবাসী দেশে ফিরে আসার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি বিমান টিকিটে ১২হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দিয়েছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি পুরোপুরি সামলানো যায়নি।

ছাত্র ভিসা নিয়ে পাঁচ বছর আগে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন বাংলাদেশের জুবায়ের আহেমদ। সে ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পর কয়েক বছর আগে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার যে সুযোগ দিয়েছিলেন, তাতে আবেদন করেন জুবায়ের আহমেদ। কিন্তু লাভ হয়নি। তাকে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে।

বিমানের টিকিট জোগাড় করার পরেও নির্দিষ্ট তারিখে বাংলাদেশে আসতে পারেননি তিনি। ভিড়ের কারণ মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে দেরি হয়েছে মি: আহমেদের।

জুবায়ের আহমেদ বলেন, “স্পেশাল পাস নেবার জন্য আমি ভোর সাড়ে তিনটায় গিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসে পৌঁছি। স্পেশাল পাস না পেয়ে অনেকে কান্নাকাটি করছে। “

কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলেন, মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে ছয় লাখের বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছে। তবে অবৈধদের বিষয়ে তাদের কোন ধারণা নেই।

ঐ কর্মকর্তা দাবি করেন, যারা বাংলাদেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক তারা সবাই মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পেয়েছেন।

কিন্তু সেখানকার বাংলাদেশিরা বলছেন, অর্থ সংকটের কারণে অনেকে যে বিমান টিকিট কিনতে পারেনি এবং জরিমানার টাকা জোগাড় করতে পারেননি সে ধারণা নেই বাংলাদেশ দূতাবাসের। বিবিসি

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ২০২৪ সালের মধ্যে মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ
Next post প্রয়াত মনোয়ারা বেগমের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া
Close