Read Time:6 Minute, 17 Second

কাজী মশহুরুল হুদা :

ক্যালিফোর্নিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠিত হয়েছে। এটি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে পরিচিত। সাংগঠনিকভাবে বঙ্গবন্ধু পরিষদের কাজ যদি বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে তার জন্মদিবস বা মৃত্যুদিবস পালনে আবদ্ধ থাকে তাহলে সংগঠন হবে নাম মাত্র বা নাম সর্বস্ব। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করাই যদি লক্ষ্য থাকে তাহলে এর ব্যাপ্তি হতে হবে আরও বৃহত্তর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখন কোন দলের ব্যাক্তিত্ব নয়। জাতির পিতা হিসেবে বাংলাদেশের তথা সমগ্র বাঙালী জাতির সম্পদ। দেশের সংবিধান অনুযায়ী তিনি জাতির পিতা। এ নিয়ে দ্বিমতের কোন অবকাশ নেই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বা তার নামে যদি কোন সংগঠন হয় তা হতে হবে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য। বঙ্গবন্ধু একটি জাতির জন্ম দিয়েছে, একটি দেশের জন্মভূমি সৃষ্টি করেছে। তার স্বপ্ন ছিল সেই দেশকে বিশ্বের বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা, সুপরিচিত করে তোলা। দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্থান, কাল, পাত্র ভেদে দেশে এবং প্রবাসে তার প্রতিফলন এক নাও হতে পারে। ভিন্নতর হওয়াটাই স্বাভাবিক। প্রবাসে প্রতিফলনের দুটি দিক বা পদ্ধতি নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত : প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে উত্তর আমেরিকার বাঙালির প্রজন্মের মধ্যে বিস্তার লাভ করাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ এই সংগঠনের উচিত হবে প্রতি বছর প্রবাসী বাংলাদেশী আমেরিকান নতুন প্রজন্মের ছাত্র/ছাত্রীদের গ্রাজুয়েশনের পর বার্ষিক গ্রাজুয়েশন সেরিমনি করা। কমিউনিটির প্রজন্মদেরকে এওয়ার্ড সার্টিফিকেট প্রদান করবে এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সুপরিচিতভাবে তার কর্মকান্ড তুলে ধরবেন। যার মাধ্যমে পরবর্তি জেনারেশন তাকে এবং তার কর্মকান্ড সম্পর্কে পরিচিত করে তুলতে হবে।

দ্বিতীয়ত : আমি বলেছি স্থান কাল পাত্র ভেদে সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ভিন্নতর হতে পারে। প্রবাসে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে বা ব্যাক্তিত্বকে তুলে ধরতে গেলে মাওসেংবা লেলিনের ছবি সহ বিভিন্ন দেশে তাদের আদর্শিক অনুসারীদের মত (যেমন লেখা যায় অতীতের ছবিগুলোতে) তার ছবিসহ দেশের পতাকা নিয়ে রাস্তায় প্যারেড করতে হবে, যাতে মূলধারার মানুষ সহ সকলে দেখতে পারে। জানতে পারে এবং চিনতে পারে কে এই ব্যাক্তি?

লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশ ডে প্যারেড হয়, অন্যান্য বিভিন্ন প্যারেড বিভিন্ন সময়ে হয়ে থাকে। যেমন- একো কমিউনিটি প্যারেড, কোরিয়ান কমিউনিটির প্যারেড, আরমেনিয়ান জেনোসাইড প্যারেড, ফিলিপিনো প্যারেড ইত্যাদি কমিউনিটি আয়োজিত প্যারেড। এই সকল প্যারেডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গবর্ষের মঙ্গল শোভা যাত্রার মত দেশের পতাকা ও বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ অন্যান্য দেশীয় কৃষ্টির প্রতীক সহকারে দেশীয় পোশাকে হাটা সহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমেই বিশ্ববাসী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পারবে বঙ্গবন্ধু তথা দেশকে। দেশের মানুষকে এগুলোর জন্য অর্থের প্রয়োজন হয়না। প্রয়োজন উৎসাহ, আগ্রহ ও উদ্যম।সত্যিকার অর্থে এবং প্রকৃতভাবে যদি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে এই সংগঠন করা হয়ে থাকে তাহলে শুধুমাত্র সভা করে মুষ্টিমেয় কয়েকজন নিয়ে বছরে এক বা দুবার আলোচনার মধ্যে সীমাবন্ধ না থেকে, তার আদর্শকে সোনার বাংলাকে দামাল ছেলের মত দামামা বাজিয়ে জাহির করতে হবে, তুলে ধরতে হবে। তার জন্য নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের, কমিউনিটির মানুষদের নিয়ে প্রবাসের মাটিতে হাটতে হবে।

বঙ্গবন্ধু প্রেমিকদের নিয়ে একটা টিম তৈরি করলে দেখা যাবে এ দেশের মানুষরাও প্যারেডে যোগ দিয়ে হাঁটবে। দেশকে, জাতির পিতার স্বপ্নকে বুকে নিয়ে হাঁটবে। তবে উদ্ভুদ্ধ করার দায়িত্ব সংগঠকদের। এটা যদি করতে না পারেন তাহলে ব্যর্থ হবেন সোনার বাংলাকে বিদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠত করতে। ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতে উল্লেখিত কর্মকান্ড করার পরিকল্পনা করুন সহযোগিতার হাত থাকবে। নিজেদের প্রজন্মের কাছে জিজ্ঞাসা করলে কেউ বলতে পারেনা বাংলাদেশের জাতির পিতাকে! এই না জানাকে জানার সহজ, সরল পথ হল পথে হাঁটা। আগামীতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের পরিকল্পনা হোক বঙ্গবন্ধুর আউটরিচ।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কার্যক্রম নিয়ে লস এঞ্জেলেস কন্সুলেটে বিশেষ আলোচনা
Next post ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত
Close