Read Time:4 Minute, 50 Second

কাজী মশহুরুল হুদা :

আমেরিকা সহ পাশ্চাত্যে দূর্নীতির প্রভাব লুপ্ত প্রায়। তার কতগুলো কারণ আছে। আমি আমেরিকার কথা দিয়েই শুরু করতে চাই। এদেশে যে কোন জনপ্রতিনিধিকে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে তাদেরকে প্রথমত: তিনটি কোর্সের ট্রেনিং নিতে হয়। তা তৃণমূল থেকে প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত সকলকে ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সিটি পর্যায় থেকে, স্টেস্টও ফেডারেল পর্যায়ের যে কোন জনপ্রতিনিধিকে নীতিশাস্ত্র (এথিকস), আচরণ বিধি (কোড অব কন্ডারস) এবং তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে ট্রেনিং এর মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। ট্রেনিং শেষে পরিক্ষা হয় যা ৭০-৮০% নাম্বার অর্জন করে সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হয়।

নীতি শাস্ত্রে এই সকল জনপ্রিতিনিধিদেরকে তাদের নিয়মাবলী মেনে নিতে হবে। অন্যথায়, শাস্তির বিধান রয়েছে। সর্বপরি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি। যেমন কেউ নির্দিষ্ট পরিমানের অতিরিক্ত উপঢৌকন বা উপহার গ্রহণ করতে পারবে না। এমনকি ট্রান্সপোটেশনের টিকিট এবং হোটেলের খরচও না। এটাই গিফটের মধ্যে পড়ে। জনপ্রিতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের উর্দ্ধে কোন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না। প্লেনের আপ গ্রেড ও তার মধ্যে পড়ে। এত সব কিছু নীতিমালা তাদের মেনে চলতে হয়। অর্থায়নের ক্ষেত্রে আরও কড়াকড়ি আইন রয়েছে।

বোর্ড মেম্বারদের ভোটাভুটির মাধ্যমে অনুমোদন ছাড়া রাজকোষের কোন অর্থ ব্যায় করতে পারবে না। যদি করে তা নিজ পকেট থেকে পূরণ করে দিতে হবে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে কোন প্রকল্পের ক্ষেত্রে যদি ব্যাক্তিস্বার্থ জড়িত থাকে বা আত্মীয় স্বজনের সূত্র থাকে তাহলে বিল পাশের ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এমনকি ভোটাভুটির সময় অধিবেশনে অবস্থান পর্যন্ত করতে পারবে না। অন্যথায় জেল জরিমানা এমনকি পদত্যাগেরও মানহানির প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে।

আচরণ বিধির ক্ষেত্রে কোন জনপ্রতিনিধি হয়রানি বা বুলি আচরণ করতে পারবেনা। সকল নিয়মাবলি অমান্যকারীদের প্রতি কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। ফলে এখানকার জনপ্রতিনিধিবৃন্দ দেশের দায়িত্ব গ্রহনের পূর্বে তিনটি বিষয়ে ট্রেনিং এর মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় এবং তাদেরকে সেই মোতাবেক অফিস পরিচালনা করতে হয়। যার কারণে তাদের নিয়মের বাইরে বেরিয়ে দায়িত্ব পালন করার অবকাশ থাকে না এবং তারা প্রত্যেকেই সেই মোতাবেক চলে।

যেখানে জনপ্রতিনিধি দুর্নীতি বা ঘুষ খেতে পারে না বা সুযোগ থাকেনা। সেখানে অধিনস্থ কর্মচারিবৃন্দ খাওয়ার সুযোগ বা প্রশ্নই থাকে না। এদেশে কোন কর্মচারীকে যদি ব্যাক্তিস্বার্থে কাউকে ঘুষ প্রদানের প্রস্তাব করে তাহলে উক্ত কর্মচারীই পুলিশের কাছে রিপোর্ট করে ব্যাক্তিকে জেলে পাঠিয়ে দেয়। না হলে উক্ত কর্মচরীরই জেলে যেতে হতে পারে ঘটনা গোপন করার জন্য। এই পদ্ধতিগত নিয়মতান্ত্রিকতার দুর্নীতির প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমাদের তৃতীয় বিশ্বে যদি জনপ্রতিনিধিদের উপর উপরোক্ত নিয়মকানুন বলবৎ করা যায় তাহলে হয়তো দূর্নীতির প্রভাব মুক্ত হতে পারত বা পারে। জনপ্রতিনিধি যদি কোন প্রকার দূর্নীতির সুযোগ না থাকে তাহলে অধীনস্থ কর্মচারীবৃন্দ দূর্নীতিপরায়ন হতে পরে না। জনপ্রতিনিধিই দূর্নীতির মূল উৎস।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ফোবানা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী সচিবের সাংগঠনিক সফর
Next post আকাশে বিমানে আগুন, শিশুসহ নিহত ৪১
Close