সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসকে নিশ্চিহ্ন করায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসকে (এসডিএফ) স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পাশাপাশি তিনি এসডিএফকে সতর্ক থাকতে বলেন। কারণ তারা এখনও হুমকিস্বরূপ। খবর বিবিসি।
তিনি বলেন, আইএস সম্পূর্ণভাবে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে সবসময় সতর্ক থাকবে।
ট্রাম্প বলেন, সিরিয়া ও ইরাক অঞ্চলে আইএসের আধিপত্য শেষ হলেও নাইজেরিয়া ও ফিলিপাইনে তারা এখনও সক্রিয় রয়েছে।
এদিকে শনিবার সিরিয়ায় হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস নিয়ন্ত্রিত আর কোনো অঞ্চল নেই। তাদের সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এমনটিই দাবি করেছে আইএসের সঙ্গে লড়াই করা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)।
এক ঘোষণায় তারাও জানিয়েছে, পূর্ব সিরিয়ায় আইএসের শেষ ঘাঁটি বাঘুজ দখল করে নিয়েছে তাদের যোদ্ধারা।
এর মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কথিত ‘খেলাফত’র অবসান হল বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘১০০ ভাগ পরাজিত হয়েছে আইএস। শুক্রবার ফ্লোরিডায় সাংবাদিকদের সামনে পূর্বের এবং বর্তমানের দুটি মানচিত্র তুলে ধরেন তিনি।
তিনি মানচিত্র দুটি একজন সাংবাদিকের হাতে তুলে দেন। বলেন, আপনারা যদি দেখেন, এই হল আইএস। গতরাত পর্যন্ত অবস্থা হল এই। মানচিত্র দুটিতে দেখা গেছে, আগে সিরিয়াজুড়ে আইএসের আধিপত্য ছিল। কিন্তু এখন তা একেবারেই নেই।’
এক টুইট বার্তায় আইএসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের কথা জানায় এসডিএফ। শনিবার এসডিএফের এক মুখপাত্র মুস্তাফা বালি আইএসের চূড়ান্ত পরাজয়ের কথা ঘোষণা করেন।
বলেন, বাঘুজে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে তাদের পাঁচ বছরের খিলাফতের অবসান হয়েছে। আরও বলেন, সিরিয়ার ছোট্ট একটি গ্রাম বাঘুজে ছিল আইএসের শেষ ঘাঁটি এবং সেখানে তারা নিজেদের পতাকা উড়িয়েছে।
একসময় আইএসের শক্তি যখন তুঙ্গে, তখন তারা সিরিয়া ও ইরাকের ৮৮ হাজার বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করত। আয়তনের দিক থেকে সেটি ছিল ব্রিটেনের সমান।
সেখানকার বাসিন্দা এক কোটি লোকের ওপর তারা জঙ্গি ধর্মীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করেছিল। তেল বিক্রি, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং ডাকাতি করে তারা শত শত কোটি ডলার আয় করেছিল।
সারা বিশ্ব থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা আইএসের পক্ষে লড়াইয়ে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু সিরিয়ার সরকারি বাহিনী এবং কুর্দিপ্রধান এসডিএফ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে হারতে হারতে তারা শেষ অবস্থান নিয়েছিল পূর্ব সিরিয়ার বাঘুজে।
এখন তাদের সেই ঘাঁটিরও পতন ঘটল। এসডিএফ আইসএসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াই শুরু করে গত মার্চ মাসে। কিন্তু সেই অভিযানের তীব্রতা কিছুটা কমে আসে যখন জানা যায় যে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিভিন্ন ভবন, তাঁবু আর
সুড়ঙ্গগুলোতে বহু বেসামরিক মানুষ আশ্রয় নিয়ে আছেন। লড়াই থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হাজার হাজার নারী ও শিশু সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
More Stories
ইরানের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানালো ইসরায়েলি বাহিনী
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন থেকেও হামলা চালানো হয়েছে। হামলার...
ইসরায়েলে হামলা নিয়ে যা বললেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অতিসম্প্রতি ইসরায়েলে যে ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী, সেই হামলা ছিল ‘সংক্ষিপ্ত’ এবং এতে শুধু সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।...
গাজায় দুর্ভিক্ষের কথা স্বীকার করলো যুক্তরাষ্ট্র
গাজা উপত্যকার অন্তত কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ চলছে বলে স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শুক্রবার এই তথ্য...
অবশেষে নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। পাস হওয়া এই প্রস্তাবটিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির...
গাজায় যুদ্ধবিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে রাশিয়া-চীনের ভেটো
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তোলা প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া, চীন ও আলজেরিয়া।...
রমজানে একবারের বেশি ওমরাহ বন্ধ করল সৌদি আরব
পবিত্র রমজান মাসে কাবা শরিফ ও মসজিদুল হারামে মুসল্লির ভিড় কমাতে একাধিকবার ওমরাহ ও কাবা শরিফ তাওয়াফের অনুমতি না দেওয়ার...