Read Time:19 Minute, 39 Second

বাংলাদেশ মূকাভিনয় ফেডারেশনের আয়োজনে ‘মাইম ডিরেক্টরস মিট, ২০১৮’ হতে যাচ্ছে যেনে ভালো লাগলো। এটি একটা মূকাভিনয় চচ্র্চার ক্ষেত্রে প্রগতির মাত্রা, উন্নয়নের ধাপ। ’মূক ভাষায় বাংলার সংস্কৃতি’ এ জাতীয় শ্লোগান স্বতন্ত্র শিল্প মাধ্যমকে প্রাধান্যের পথ প্রসস্থ করে। রেজাওয়ান রাজন আমাকে মাইম ডিরেক্টরস মিট, ২০১৮ তে তিনটি বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানায় এবং ’মূকাভিনয় ও বিশ্বায়ন’ মূলক লেখার জন্য অনুরোধ করে।

বিশ্বে মূকাভিনয় কর্মকান্ডকে দু’ভাবে আলোচনায় আনা যায়-

১. একাডেমিক দিক

২. কালচারাল।

১. একাডেমিক :

একাডেমিক হল মূকাভিনয়ের ভাষা, টেকনিক, প্রিন্সিপাল। মূকাভিনয়ের ভাষা হল শারীরিক যা, টেকনিকের ব্যাবহারে নীতিমালার মাধ্যমে মনের ভাব, ভাবনা বা চেতনাকে একটি স্বতন্ত্রে প্রকাশ করা। এই দৈহিক অঙ্গভঙ্গিমার সঞ্চালনকে বিভিন্ন পদ্ধতি বা প্রক্রিয়ায় প্রকাশ ঘটে। বর্তমান সময়ে একাডেমিক দিক থেকে বিশ্বে তিনটি ‘স্কুল অব মাইম’ চালু আছে। একটি মার্সেল মারস্যু’র স্কুল, দ্বিতীয়টি করপোরিয়াল মাইম এবং তৃতীয়টি ফিজিক্যাল থিয়েটার।

মার্সেল মারস্যু’র স্কুল অব মাইম :

মারস্যু‘র স্কুলিং সিস্টেম আমাদের সকলের জানা আছে, কারন মূলত আমরা যারা বাংলাদেশে মূকাভিনয় চচ্র্চা করি তা হচ্ছে থট অব মার্সেল মারস্যু। যাকে মােইম বা প্যান্টোমাইম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ইলুশন টেকনিকে মুখের অভিব্যাক্তি এবং হাতের সঞ্চালনে অতিরঞ্জিত ভাব ভঙ্গিমায় ঘটনাকে তুলে ধরা হয়। যেখানে রয়েছে মুখের অভিব্যক্তি, নাটকীয়তা, গল্পের ধারাবাহিকতার প্রবাহ। অতিরঞ্জিত দৈহিক অঙ্গভঙ্গির সঞ্চালন। তবে মূকাভিনয় ও থিয়েটারের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। ডায়ালগহীন অভিনয়ই কিন্তু মূকাভিনয় নয়। দুটিকে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র ইউনিক শিল্প মাধ্যম হিসেবে দেখতে হবে। আমি লক্ষ্য করেছি- মূকাভিনয় শিল্পীদের মধ্যে থিয়েটারের প্রভাব প্রচণ্ডভাবে জড়িয়ে থাকে। এই বলয় থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। স্কেচ নির্মাণে নাট্যকার, নাট্যপরিচালক, নাট অভিনেতার চরিত্র ভুলে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে নিজেকে নির্ণয় করতে হবে। স্বতন্ত্র মাইম রচয়িতা, মাইম ডিরেক্টর এবং মাইম আর্টিস্ট হিসেবে। যেহেতু মাইমের টেকনিক ব্যাবহৃত হবে, মাইমের এ্যাটমোসফেয়ারে পারফর্ম করতে হবে। সেক্ষেত্রে নাটক বা থিয়েটারের অবয়বকে চিন্তার ভেতরে রেখে মাইম স্কেচ করলে থিয়েটার প্রভাবিত স্কেচ নির্মিত হবে। মাইম স্কেচ সৃষ্টি হবে অঙ্গভঙ্গির অনুভূতি প্রকাশে। গল্প সৃষ্টি হবে থীমের উপর, ঘটনার প্রকাশ গল্পকারে নয়, টেকনিকের অভিব্যাক্তিতে। যেমন- মার্সেল মারস্যুর মুখোশ স্কেচ। একটি মুখোশ বিক্রেতা মুখোশ বিক্রির জন্য বিভিন্ন মুখোশ ক্রেতাদের দেখাতে গিয়ে একটি মুখোশ মুখের সাথে আটকে যায় এবং হাসি মুখের মুখোশটিই আটকে যায়। টেকনিকটা এখানেই। হাসিমুখ কিন্তু দৈহিক অভিব্যাক্তি জীবন নামের।

মঞ্চের শূণ্যতার মাঝে দৈহিক অঙ্গভঙ্গিমার ইলুশন টেকনিকে গল্পের সৃষ্টি হচ্ছে। মূকাভিনয় শিল্পী যা ভাঙ্গিমায় প্রকাশ ঘটাচ্ছেন, তা তিনি তার ইনার ভিশনে যতটা সুস্পষ্ট ভাবে কল্পনায় দেখতে পারবেন এবং অঙ্গিমায় প্রকাশ ঘটাতে পারবেন দর্শক ঠিক তেমনি ভাবেই পারফরমারের মনের চিত্র বা মনেরভাব দেখতে পারবেন। মুখে না বলা কথাগুলো দর্শকের মনের ভেতর ভেসে উঠবে।

মূকাভিনয় শিল্পী যদি নিজে তার মনের ভাব দেখতে না পারে, দর্শকও ব্যার্থ হবে শিল্পীকে দেখতে। স্কেচের গল্পকে থিয়েটারের মত করে না, মূকাভিনয়ের মত করে সৃষ্টি করতে হবে যেমনটি করেছিলেন মার্সেল মারস্যু।

এখানে উল্লেখ করতে চাই, মূকাভিনয় যখন থিয়েটারে ব্যাবহৃত তার মধ্যে স্বতন্ত্র শিল্প মাধ্যমে এবং থিয়েটারে ব্যাবহারের মাধ্যে কিছুটা ব্যাতিক্রম আছে। মূকাভিনয় আর্ট শুধু মূকাভিনয়ের টেকনিক ও পদ্ধতি দিয়েই স্কেচ নির্মিত হয়। আর যখন থিয়েটারের স্বার্থে মূকাভিনয়কে সংযোজন বা ব্যবহার করে তখন অতিরঞ্জিত বা অতি মাত্রায় প্রকাশ করা হয় না। যথার্থ বাস্তব অবয়বে চিত্রায়িত করা হয়। থ্রি ডায়মেনশন অর্থাৎ আয়তন দৈঘ্য, প্রস্তের প্রকাশ নিয়মতান্ত্রিকভাবে দেখান হবে। অর্থাৎ নাটকীয়তার সঙ্গে মিল থাকবে। বাস্তবতার সাথে সংগতি পূর্ণ হতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে মূকাভিনয়ের টেকনিক থিয়েটার আর্টের ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত হচ্ছে, সেহেতু থিয়েটারের সাথে মিল থাকবে মাইমের সকল ইলুশন। মূকাভিনয় শিল্পীদের মনে রাখতে হবে যে- মাইম ইস দ্যা বার্ডার লাইন বিটুইন থিয়েটার আর্ট এবং আর্ট অব ড্যান্স।

করর্পোরিয়াল মাইম :

মার্সেল মারস্যুর স্কুল অব থট, এসেছে কমিডিয়া ডেল আর্টে চার্লি চ্যাপলিনের থিয়েট্রিক্যাল আর্ট ফর্মের সংযোগে। কিন্তু করপোরিয়াল মাইম মারস্যুর স্কুল থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী। মারস্যুর স্কুল নাটকীয়তার দৈহিক অঙ্গভঙ্গি ও মুখের অভিব্যাক্তিকে না বলা কথার প্রকাশ ঘটে। কিন্তু করপোরিয়াল মাইমে নাটকীয়তা মানবদেহের অভ্যান্তরিন সঞ্চালনে প্রকাশ ঘটে। যেখানে মুখের অভিব্যাক্তি গৌন। এই মাধ্যমে, মাইম দৈহিক সঞ্চালন ৫টি নীতিমালায় সঞ্চালিত হয়, যা নাটকীয়তার হৃদয়। যথা, পালস, হেজিটেশন, ওয়েট, রেজিসটেন্স এবং সারপ্রাইজ।

এতিয়েন ডিক্র এই আধুনিক মাইমের জনক। তিনি না বলা কথা দৈহিক মুভমেন্টের বর্ণমালায় অভিনব প্রক্রিয়ায় বিমূর্ত করে প্রকাশ ঘটিয়েছেন। ডিক্র ড্রামাটিক করপোরিয়াল মাইম মুভমেন্টে অদৃশ্যকে দৃশ্যতর করে তোলার আর্ট নির্মাণ করেছেন। মাইম মুভমেন্টে অদৃশ্যকে দৃশ্যতর করে তোলার আর্ট নির্মাণ করেছেন। যেমন- পেইন্টার তার চিত্র এ্যাবর্স্টাক্ট ফর্মে তুলে ধরেন। তেমনি ভাবে ডিক্র মুকাভিনেতার মাধ্যেমে চিন্তার মুভমেন্টকে প্রদর্শন করার ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছেন। যা আর্ট অব সাইলেন্স থেকে আর্ট অব মুভমেন্টে রূপান্তিরিত করেছেন। করপোরিয়াল মাইমে অভিনেতার স্কেচে দৈহিক মেটাফোরসের সুযোগ অধিক রয়েছে। যা অভিনেতার কা্ল্পনিক শক্তি, দৈহিক নমনীয়তা, রীদম, দৈহিক ভারসাম্যতা, দৈহিক সামর্থ বৃদ্ধি করে। আগেই বলেছি, ডিক্রর মুভমেন্ট স্টাইল, কমেডিয়া ডেল আর্টের ফর্ম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ডিক্রু প্রভাবিত হয়েছিলেন ক্ল্যাসিক্যাল আর্ট ফর্ম থেকে। করপোরিয়াল মাইম বিমূর্ত অভিব্যাক্তি এবং ইউনিভার্সাল ধারণা এবং ইমোশনাল চিন্তা সমগ্র দেহের মুভমেন্টের মাধ্যমে সংহিতাবদ্ধ করে (বিশেষত: মেরুদণ্ডের সঞ্চালনে সীমাবদ্ধ থাকে, এখানে মুখমণ্ডল এবং হাতের কার্যকারিতা গৌণ।

ফিজিক্যাল মাইম থিয়েটার, স্কুল অব লিকক :

জ্যাকিউস লিকক লিকোল ইন্টারন্যাশনাল ডি থিয়েটার জ্যাকিউস লিকক নামে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন প্যারিস। তিনি ১৯৫৬ থেকে ফিজিক্যাল থিয়েটার মাইম এবং মুভমেন্টের সম্বন্বয়ে নতুন ধারার পদ্ধতি সৃষ্টি করেন। যার মাধ্যমে তিনি অভিনেতার দৈহিক খেলার চিন্তায় ইমপ্রোভাইজেশন, ক্রিয়েটিভ মুভমেন্ট প্রতিনিয়ত উৎসাহিত করার প্রতি গুরুত্ব দেন।

ফিজিক্যাল থিয়েটার হল, থিয়েট্রিক্যাল পারফরমেন্স বা প্রাথমিকভাবে ঘটনাকে দৈহিক মুভমেন্টের মাধ্যেমে পরিবেষ্টন করে। অনেক ক্ষেত্রে ঘটনা বা গল্পকে ফিজিক্যাল মোশনের দ্বারা পারফরমার জ্ঞাত করে।

আধুনিক ফিজিক্যাল থিয়েটারের উৎপত্তি হয়েছে মাইম এবং থিয়েট্রিকাল ক্লাউনিং স্কুল (যেমন- লিকক এর স্কুল) থেকে যা অনেক অত্যাধুনিক অভিব্যাক্তি ফিজিক্যাল থিয়েটারের জন্ম দিয়েছে। সমকালীন (কনটেমপোরারি) ড্যান্সে লিককের মুভমেন্ট পদ্ধতির প্রভাব রয়েছে। ফিজিক্যাল থিয়েটার, ড্যান্স এবং থিয়েটার আর্টের বর্ডার লাইনে চলাচল, যার উৎস কমেডিয়া ডেল আর্টে, প্রাচীন গ্রীক থিয়েটারে সংযোজন ঘটে। সকল ধরণের পদ্ধতির মুভমেন্টের ফিউশনে অত্যাধুনিক ফিজিক্যাল থিয়েটার হচ্ছে লিকক এর স্কুল অব মাইম। মর্ডান ফিজিক্যাল থিয়েটার পারফরমেন্ট বর্তমানে পাশ্চত্যে অত্যান্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

বহি:বিশ্বে এককভাবে মাস্যুর কার্যক্রম ট্র্যাডিশন মাইম হিসেবে চিহ্নিত। করপোরিয়াল মাইম যদিও বিমূর্ত মাইম শিল্প, কিন্তু ব্যাপকতায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সর্বত্র প্রচলিত নয়। আর্ট ফর আর্টসেক, বোধগম্যতার স্বল্পতার কারণে জনপ্রিয়তা কম। তবে অত্যাধুনিকতায় ফিজিক্যাল থিয়েটারে কর্পোরিয়াল মুভমেন্ট, থিয়েট্রিক্যাল ড্যান্সমুভমেন্টের সাথে চমৎকারিত্বে দর্শনীয়তায় জনপ্রিয়। বর্তমান বিশ্বে লিককের আধুনিক ফিজিক্যাল থিয়েটার সমকালীন সময়ের মাইম আর্ট। এক্ষেত্রে, পারফরমারকে থিয়েটার, মার্সেল মারস্যু, করপোরিয়াল, আধুনিক ড্যান্স, একরোব্যাটিক অনুশীল ও দৈহিক সামর্থের পারদর্শীতা অর্জন করতে হয়।

(ফিজিক্যাল থিয়েটার ভিডিও থেকে সম্যখ ধারণা অর্জন করা সম্ভব হবে মাইম ডিরেক্টরদের জন্য)।

এই হল সংক্ষেপে বিশ্বে মাইমের একাডেমিক দিক।

২. কালচারাল :
মাইমের একাডেমিক পদ্ধতিগত দিক, নীতিমালা ও নিয়মকানুন বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই একইভাবে অনুশীলন বা চর্চচা অব্যাহত রয়েছে। মূলত: তৃতীয় বিশ্বে মার্সেল মাস্যুর স্কুল অব মাইম জনপ্রিয় ও প্রচলিত। করপোরিয়াল মাইম ইউরোপে বিশেষত প্যারিস, ইংল্যাণ্ড সহ অন্যান্য দেশে প্রদর্শিত হয় এবং চর্চ্চা করে। কিন্তু ফিজিক্যাল মাইম থিয়েটার ইউরোপ ও আমেরিকায় অভিনবত্বের কারণে জনপ্রিয় ও প্রদর্শিত হয়। আমেরিকায় মাস্যুর মাইমের জনপ্রিয়তা তেমন পরিলক্ষিত হয় না। কারণ, আমেরিকায় ট্রেডিশন থেকে আধুনিকতার প্রভাব বেশি।

এশিয়ায় ট্রেডিশন মাইমেল চর্চ্চায় মূলত: হয়। এই সকল মূকাভিনয়ের বিভিন্ন স্কুলের অনুশীলন বিভিন্ন দেশে উপস্থাপনায় বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। তবে টেকনিক সকল ক্ষেত্রে প্রায় একই। উপস্থাপনার বিভিন্নতার কারণ হল কালচারাল ব্যাকগ্রাউন্ড। চীন, জাপান, ইন্ডিয়ার সংস্কৃতি, জীব প্রণালী ভিন্নতর। ফলে তার প্রভাব মাইম শিল্পের উপর পড়াটায় স্বাভাবিক। গ্রীক থেকে মাইম যখন ইতালিতে যায়, তখন কমেডিয়া ডেল আর্টের প্রভাবে মাইমের স্বরূপ বা রূপরেখা বদলে যায়। প্রত্যেক দেশের শিল্প, সাহিত্য, নৃত্য সংগীত বা থিয়েটার তার কৃষ্টির আবর্তে স্বতন্ত্র ও নিজেস্বতা ধারণ করে। তেমনি ভাবে বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রভাবে মূকাভিনয় নিজস্ব ধারা নির্মাণ বা সৃষ্টি হওয়া কোন বৈচিত্র্য নয়। ইন্ডিয়ান মাইম এবং বাংলাদেশের মাইম চর্চ্চায় খুব একটা পার্থক্য নেই। আমরা মারসু্র স্কুলকেই অনুকরণ করে ইন্ডিয়ান থিয়েট্রিক্যাল ফর্মে গল্পের আকারে উপস্থাপন করি। বাংলাদেশের মাইমে থিয়েটারের প্রভাব বেশি।
কারণ থিয়েটার শিল্পীদের মাধ্যমে মাইম আর্টের চর্চ্চা হয় এবং মাইমের ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে এ কথা অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই।
ট্রেডিশন মাইমের চর্চ্চার সাথে পরীক্ষা নিরীক্ষার দ্বারা আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির প্রভাব নিজস্ব ধারার সৃষ্টি হয়েছে বা হচ্ছে। তবে এখন মাইম শিল্পকে আমাদের দেশীয় আঙ্ঘিকে অনুশীলনের মাধ্যেমে বিভিন্ন ফর্মের সংমিশ্রনে নতুনত্বের বিকাশ ঘটানোর সময় এসেছে। ট্রেডিশনের সঙ্গে করপোরিয়াল মুভমেন্টের সংযোগ এবং ফিজিক্যাল থিয়েটারের মিশ্রণে ফিউশনে অভিনব ধারার প্রবর্তন ঘটাতে পারি। এক্ষেত্রে মাইম ডিরেক্টরসদের পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদেরকে বিভিন্ন ফর্ম সম্পর্কে অনুশীলনের মাধ্যমে আয়ত্ব করতে হবে, গবেষণা করতে হবে। নিজেদেরকে বিভিন্ন ফর্ম সম্পর্কে অনুশীলনের মাধ্যমে আয়ত্ব করতে হবে, গবেষণা করতে হবে। শুধু ট্রেডিশন মাইমকে নিয়ে চিন্তাভাবনা না করে বিশ্বের মাইমকে আয়ত্বের মধ্যে এনে পারদর্শীতা অর্জন করতে হবে এবং সৃষ্টিশীলতায় মেতে উঠতে পারলে বাংলাদেশে মাইম শিল্পের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে, যা অন্যদের থেকে ভিন্নতা বয়ে আনবে নিজেস্ব কালচারের প্রভাবে।
আমি বাংলাদেশের মাইম ডিরেক্টরসদেরকে অনুরোধ করব, গতানুগতিকতার বাইরে মাইমকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার জন্য, ট্রেডিশনকে ভেঙে ফিউশন সৃষ্টির ভেতর দিয়ে নব্যধারার সৃষ্টি করে আধুনিক মাইমের ধারা সৃষ্টির ভেতর দিয়ে দেশজ স্টাইল নির্মাণ করার। আমাদের লোকজ শিল্প আছে, গ্রামীণ মুভমেন্ট আছে, তাকে একাডেমিক ভাবে শৈল্পিক চিন্তাভাবনায় উপস্থাপনের মাধ্যমে নতুনত্বের সুযোগ আছে।
প্রাকটিক্যাল গবেষণা ছাড়া নির্ণয় করা দূরুহ হবে।
পরিশেষে, বিশ্বের সকল মাইম স্কুলের ধ্যান ধারণা অর্জনের পরামর্শ দিচ্ছি, যার প্রভাবেই নতুনত্বের উদ্ভাবন সম্ভব হবে। ডিজিটাল ওয়াল্ডের মাধ্যমে শিল্প মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। প্রয়োজন অনুসন্ধিৎসু মন। ইউটিউব, ফেসবুক, ওয়েব সাইডের মাধ্যমে অতি সহজেই এই সকল বিষয়ের ধারণা আয়ত্ব করতে সক্ষম হবে। সফল হোক বাংলাদেশ মাইম ফেডারেশনের প্রচেষ্টা। শুভেচ্ছা রইল বাংলাদেশ মাইম যোদ্ধাদের প্রতি।
কাজী মশহুরুল হুদা
মূকাভিনয় শিল্পী

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে বিজয় বহরের থিম সং চুরির অভিযোগ
Next post লস এঞ্জেলেসে বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত
Close