কাজী মশহুরুল হুদা :
সম্প্রতি কমিউনিটিতে আইনশৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এই আইন শৃংখলা কারা ভঙ্গ করেছে? কাদের জন্য ভঙ্গ হচ্ছে? সে বিষয়ে তলিয়ে দেখা জরুরী। সাধারণ মানুষ কখনওই এ ধরণের আইন শৃংখলা ভঙ্গ করে না। দল, গ্রুপ বা সাংগঠনিক দ্বিমত থেকেই উৎপত্তি হয়। প্রত্যেকটি ঘটনার পেছনে কারণ আছে। আমরা শুধু ফলাফল নিয়ে মতামত করি। ভুলে গেলে চলবে না,-
এই লস এঞ্জেলেসে অতীতে এ ধরণের আইন শৃংখলাভঙ্গ হয়েছে। যারা ভঙ্গ করেছিলেন। আজ তারা কমিউনিটির সুধী সমাজ। তারাই নেতৃত্বের অধিকারী, সমাজপতি। বালাকে নিয়ে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছিল। বহুদিন বন্ধ ছিল। কারণ কোন সংগঠনের জন্ম নেয়নি। তারপর বাফলার আবির্ভাব। রেশারেশির সূত্রপাত হয়।
সম্প্রতি আইন শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। কমিউনিটির জন্য অবশ্যই মঙ্গলজনক নয়। কিন্তু কারা করেছে? নিশ্চই কমিউনিটির সাধারণ ব্যাক্তিবর্গ নয়, তাহলে কারা? এগুলো এখন তলিয়ে দেখার সময় এসেছে। ফলাফলের উৎস বের করতে হবে। শেকড়ের সন্ধান মিললে তা সহজ হবে নিয়ন্ত্রণের পথ।
কিছুদিন আগে সুধী সমাজের এক সুধী সভায় ব্যাক্তি বিশেষদেরকে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু লস এঞ্জেলেসের সুশীল সমাজ মনে করে আইন শৃংখলা ভঙ্গের মূল উৎস হল লস এঞ্জেলেসের আওয়ামী পরিবার। আওয়ামী পরিবারের অভ্যান্তরিন কোন্দলের প্রভাব কমিউনিটির মধ্যে সংক্রামক হিসেবে প্রভাবিত হয়েছে। দলীয় গ্রুপিং কমিউনিটির আইন শৃংখলা ভঙ্গের মূল উৎস। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ক্যালিফোর্ণিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, ক্যালিফোর্নিয়ার সৃষ্টি হল এবং পাশাপাশি একই দলের দুটি গ্রুপিং সৃষ্টি হল সেই থেকে শুরু হলো যাত্রা। ধীরে ধীরে দলীয় আদর্শ ও নির্দেশনা থেকে দূরে সরে যেতে লাগলো কর্মী, নেতৃবৃন্দ। দল থেকে গ্রুপিং বড় হয়ে দেখা দিল। সৃষ্টি হলো অঙ্গ সংগঠন সমূহ। গ্রুপিং শেকড় গেড়ে বসলো। অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে বিভক্তির শাখা সৃষ্টি হলো। এই সকল শাখা প্রশাখা সৃষ্টির পিছনে ইনুদের মত মানুষেরও হাত রয়েছে। এখন গ্রুপিং থেকে মোর্চায় রুপ ধারণ করেছে। রাজনৈতিক দলের আওয়ামী পরিবারের প্রকাশ্যে বক্তৃতার মধ্যে একে অপরকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে পিণ্ডি উদ্ধার করছে। তারই প্রভাব পড়েছে কমিউনিটির সূধীজনদের মধ্যে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে দফায় দফায় মন্ত্রীদের আগমনে গ্রুপিংদের মধ্যে চলেছে ঠেলাঠেলি। কমিউনিটি আতঙ্কের মাঝে বিরাজ করছে। কন্সুলেট অফিস পর্যন্ত তার রেশ পৌছে গেছে।
সূধীজন সভায় কেউ বক্তব্য উল্লেখ করেছেন, ‘মন্ত্রীর হোটেলে থাপ্পর/চটকানী দেওয়ার ফলে কিছু দিন ঠান্ডা ছিল। তারা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে এক পক্ষই নয়, উভয় পক্ষই মারামারিতে অভ্যস্ত। আওয়ামী পরিবারের জন্যিই আজ লস এঞ্জেলেসে আইন শৃংখলা ভঙ্গ হচ্ছে। কমিউনিটির সাধারণ মানুষকে সূধীজন সভায় ডেকে বিভক্তির ভাগিদার করা অন্যায়। আওয়ামী পরিবার এক হোন। দেখবেন কমিউনটিতে কোন কোন্দল নেই। কমিউনিটির মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। ফলাফলকে টেনে মূল শেকড়ের কারণকে উর্দ্ধে তুলে রেখে সমস্যার সমাধান বাতুলতা মাত্র। লস এঞ্জেলেসে বিএনপির মধ্যেও ভাঙ্গন আছে।, বিভক্তি আছে। গ্রুপিং আছে। কিন্তু দলের আদর্শ চ্যুত নয়। বিএনপির নেতা কাঞ্চন চৌধুরী পিকনিকের দাওয়াত দিয়েছিল। জিজ্ঞাসা করেছিলাম কোন গ্রুপের?
উত্তরে বলেছিলেন- গ্রুপ দিয়ে কি হবে? দলটা তো একটাই।
লস এঞ্জেলেসের আওয়ামী পরিবারের প্রতি আহ্বান, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন। প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করে আদর্শিক হন। দেখবেন কমিউনিটিতে কোন আইন শৃংখলা ভঙ্গ হবে না। আপনারা নিজেদের মধ্যে পারস্পারিক সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থান করলেই আপনাদের নেত্রীর হাত শক্তিশালী হবে। তৃতীয় পক্ষ থেকে দূরে থেকে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি করলেই আদর্শিক রাজনীতির পথ প্রশস্থ হবে। জয় বাংলা। শান্তি শান্তি শান্তি।
More Stories
আমেরিকায় বাঙ্গালী নারীদের অগ্রগতি
বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগতি আমরা প্রায়শই লক্ষ্য করি। কর্মক্ষেত্রের বিভিন্ন স্তরে যেমন চিকিৎসক, স্হপতি, বৈমানিক, শিক্ষক ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের...
কমিউনিটির উন্নয়নে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থাকা বাঞ্চনীয়
কাজী মশহুরুল হুদা : আমার অভিজ্ঞতায় এবং বিশ্লেষণে দেখেছি দেশের জন্য, জাতির জন্য, দেশাত্মবোধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে যারা কাজ করেন...
‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’
কাজী মশহুরুল হুদা : ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই, বাংলার ঘরে ঘরে, মুক্তির আলো ওই জ্বলছে’। একাত্তরের এই দিনে স্বাধীন বাংলা...
সম্পাদকীয় : ক্যালিফোর্নিয়া আ’লীগের ঐক্যের প্রক্রিয়া কোন পথে?
কাজী মশহুরুল হুদা : লস এঞ্জেলেস আওয়ামী পরিবারের দীর্ঘ প্রত্যাশিত রাজনৈতিক বিভবাজন সমাধানের সংলাপ অনুষ্ঠিত হল গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০...
২০২০’র একুশের ভাবনা
কাজী মশহুরুল হুদা : একুশ নিয়ে আমাদের চিন্তা চেতনায় অনেকেই পিছিয়ে আছি। আমরা ভাবছি একুশ কি উদযাপন হবে নাকি পালিত...
লস এঞ্জেলেসের নেতা সমাচার
কাজী মশহুরুল হুদা : লস এঞ্জেলেসে কোন নেতা নেই। যা আছে তা হচ্ছে- তথাকথিত নেতা অর্থাৎ স্বঘোষিত। এই সব কথিত...