Read Time:6 Minute, 13 Second

কাজী মশহুরুল হুদা :

বালার নির্বাচনকে নিয়ে জল্পনা কল্পনার অন্ত নেই। বিগত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তে বালার নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তার পূর্বেই বালার প্রেসিডেন্ট ডা: সিরাজুল্লাহ নির্বাচনকে বাতিল বা স্থগিত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনও নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে। তারপর নির্বাচন কমিশনবৃন্দ পদত্যাগ করেন। এরপর বালার কার্যকরী কমিটি এক প্রেস কনফারেন্সে স্থগিত নির্বাচনকে আগামী জুন ২০১৯ সালে হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডা: সিরাজুল্লাহ বলেছেন যে- ততদিন বর্তমান কার্যকরী কমিটি বালা পরিচালনা করবেন। এটা একটা দিক।

অপর দিক হচ্ছে- নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে একটি প্যানেল সভাপতি পদ প্রার্থী শফি আহমেদ। তিনি ১৬টি পদের পুরো প্যানেলদেয় এবং অপর প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী সৈয়দ এম হোসেন বাবু। তিনি মাত্র ৬টি পদের একটি প্যানেল জমা দেন।

এখন ঘটনা হচ্ছে- গত ১৮ সেপ্টেম্বর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডা: সিরাজুল্লাহর সঙ্গে আলাপ আলোচনার পর তিনি বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রধানের কাছে তার প্যানেলকে নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা পত্র দেন যা সামাজিক মিডিয়াতে (ভিডিও) প্রকাশিত হয়। শফি আহম্মেদের অভিযোগগুলো শোনার পর নির্বাচন কমিশনের প্রধান সামসুদ্দিন মানিক ঘটনার তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান। তারপরই ঘটনা আসে ডা: সিরাজুল্লাহ (প্রেসিডেন্ট, বালা) কাছ থেকে নির্বাচন স্থগিতের। যেহেতু প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করেছেন, সেহেতু নির্বাচন কমিশন ও বাতিল বলে ঘোষণা দেন। কিন্তু বিষয়টা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সৈয়দ এম হোসেন বাবুর প্যানেল মেনে নেয়নি। তিনি মনে করেন নির্বাচন বাতিল ঘোষণার পূর্বে অপর প্যানেল নির্বাচন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার প্যানেল বিজয়ী হয়েছে। তিনি উকিল ধরেছেন বিজয়ী ঘোষণা দেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনারদের হাতে উকিল নোটিশ এসে পৌছে গেছে (প্রেসিডেন্ট ডা: সিরাজুল্লাহও উকিল নোটিশ পেয়েছেন)।

এখন আলোচনার বিষয় হচ্ছে- যদি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেয় যে- আইনগত ভাবে সৈয়দ এম হোসেন বাবু প্রেসিডেন্ট তাহলে কি তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন? নিজে নিজে অভিষেক করে অভিষিক্ত হতে পারেন?

কারণ হল- যদি শফি আহম্মেদের পুরা প্যানেল বাতিল হয়। যেহেতু প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন এবং শফি আহম্মেদ নির্বাচন থেকে প্যানেল প্রত্যাহার করেন তাহলে শুধু শফি আহম্মেদ নন, ১৬ পদই প্রত্যাহার হবে। অপর দিকে সৈয়দ এম হোসেন বাবুর প্যানেলের ৬ জনার মধ্যে ইতিমধ্যে ৪ জন পদপ্রার্থী নির্বাচন কমিশনের কাছে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।

অর্থাৎ সৈযদ এম হোসেন বাবুর উকিল মাত্র দুটি পদের জন্য উকিল নোটিশ প্রেরণ করেছেন। তা হচ্ছে- প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারী পদ। সব কিছু কাটছাট করে দাড়াল দুটি পদ জয়যুক্ত হল। এই দুটি পদ নিয়ে কি বালার নির্বাচন বৈধ্য হয়ে যাবে? বাকী ১৪টি পদের কি হবে? প্রেসিডেন্ট এবং সেক্রেটারী পূর্ণ করবেন?

বালার নির্বাচন সিলেকটেট নয়, ইলেকটেড। হাহলে জোড়াতালির নির্বাচন হয়ে যায় না? নাকি সংবিধানে এমনটি আছে যে- প্রেসিডেন্ট ইচ্ছা করলে নিজ কক্ষমতায় বাকী পদপূরণ করার ক্ষমতা রাখেন?

বিগত প্রেস কনফরান্সে প্রেসিডেন্ট ডা: সিরাজুল্লাহ বলেছিলেন যে, বালার একটি সংবিধান আছে কিন্তু তার দুটি পাতা পেয়েছেন। তিনি এও উল্লেখ করেছেন যে, সংবিধান পুনরায় প্রণয়ন করা যায় না। সংশোধন করা যায়। তাই তিনি বালার সংবিধান সংশোধন করেছেন। মাত্র দুটি পাতার উপর ভিত্তি করেই তিনি বালার পুরাতন সংবিধান সংশোধন করে ফেললেন। তিনি তো জানেনই না বাকী পৃষ্ঠায় কি আছে? বালা আসলেই মুসিবতে আছে। মুসিবত মুক্ত করার উপায় হলো- পুরাতন সংবিধান অনুযায়ী পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা। জোড়াতালি দিয়ে কাপড় সেলাই করা যায় কিন্তু বালাকে নয়।

বালা যদি গণতন্ত্রের মুখ না দেখতে পায়, তবে সে বালার প্রয়োজন কমিউনিটিতে দরকার নেই।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post জাতির পক্ষে কাভানার কাছে ক্ষমা চাইলেন ট্রাম্প
Next post ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আ.লীগের সংবাদ সম্মেলন
Close