Read Time:6 Minute, 39 Second

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষিপ্ত পররাষ্ট্রনীতি, পুতিন প্রীতি ও সরকার পরিচালনায় অর্ধেকেরও বেশি মার্কিনি। এবার ক্ষেপছে সরকারি কর্মচারীরা। বাজেট সংকটের অজুহাতে সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি বাতিল করছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসকে পাঠানো এক চিঠিতে বেতন বৃদ্ধির পদেক্ষেপ ‘সঠিক’ হবে না বলেও কঠোর মন্তব্য করেছেন তিনি। মার্কিন সংবিধানের ‘টাইটেল ফাইভ’ বিধি বলে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের ২.১ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

বেতন বৃদ্ধি আটকে দেয়ার এ পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধী রাজনীতিক ও সরকারি কর্মচারীরা। শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।

ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় ২১ লাখ দক্ষ কর্মচারী বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এদের মধ্যে ১৭ লাখ কর্মচারীই রাজধানী ওয়াশিংটনের বাইরে থেকে অফিস করেন। বেতন বৃদ্ধি আটকে দেয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন এ কর্মচারীরা।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি বন্ধ থাকলেও বন্ধ থাকছে না সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেতন বৃদ্ধি। নতুন বছরে তাদের বেতন বাড়বে ২.৬ শতাংশ হারে। ট্রাম্পের এ একচোখা সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় তুলেছেন সরকারি কর্মচারীরা। ট্রাম্পের নিজের দল রিপাবলিকানরাও এর সমালোচনা করেছেন।

রিপাবলিকান রাজনীতিক নোরমা তোরেস এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, ট্রাম্প প্রথম পদক্ষেপে অতি ধনীদের করছাড় দিয়ে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘাটতি তৈরি করলেন, দ্বিতীয় পদক্ষেপে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ হাতাতে বাণিজ্য শুরু করলেন, এবার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের সমস্যা মনে করছেন। অপর রিপাবলিকান রাজনীতিক এরিক শলওয়েল বলেছেন, বেতন বৃদ্ধি আটকে দিয়ে কঠোর পরিশ্রমী কর্মচারীদের ঠকালেন ট্রাম্প।

যারা আমাদের পার্ক পাহারা দেন, আমাদের সমাজের সুরক্ষায় কাজ করছেন, আমাদের জনগণের সেবা দেন তাদেরকে ঠকানো হল। জেক মিলার নামে একজন লিখেছেন, বাজেট ঘাটতির অজুহাতে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি আটকে দিলেন ট্রাম্প।

প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের স্পিকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি জাতীয় বাজেটে কুলাবে না।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান আইন অনুযায়ী আগামী জানুয়ারি মাস থেকে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মচারীদের বেতন ২৫.৭০ শতাংশ বাড়বে। এতে এমনিতেই ২৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘাটতিতে পড়বে সরকার। এর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের ২.১ শতাংশ বৃদ্ধি কার্যকর হলে সরকারের বাজেট ঘাটতি হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সরকার এই বেতন বৃদ্ধির ঘাটতি মেটাতে পারবে না।’ চিঠিতে ট্রাম্প আরও বলেন, জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি ও নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় মার্কিন সংবিধানের টাইটেল ফাইভ আইন বলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘দেশকে আর্থিকভাবে টেকসই পথে চালিয়ে নিতে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বেতন বৃদ্ধিকে আমি একটি ‘বেঠিক’ পদক্ষেপ বলে মনে করি।’ তিনি আরও বলেন, এই সিদ্ধান্ত কর্মচারীদের কর্মদক্ষতায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।

কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি আটকে দিলেও চলতি বছরের শুরুতে ধনী ও বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ীদের জন্য প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার কর ছাড় দিয়েছেন ট্রাম্প। এছাড়া সরকারের অন্যান্য খাতে ব্যয়ের জন্য ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বিশাল বিল পাস করেছেন তিনি।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি : ফের হুমকির সুর ডোনাল্ড ট্রাম্পের গলায়। এবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিশানায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বৈষম্যমূলক নীতি নিচ্ছে।

অবিলম্বে এই নীতি পরিবর্তন না করা হলে আমরা সংস্থা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেব।’ ট্রাম্পের সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দ্বন্দ্ব নতুন নয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করেছেন তিনি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post প্রসঙ্গ : লস এঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিতব্য শেখ কামাল টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট
Next post আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬ মাস নিষিদ্ধ সাব্বির
Close