Read Time:5 Minute, 34 Second

সারা ফুটবল বিশ্ব অপেক্ষায় ছিল শেষ আটে ধ্রুপদী এক লড়াইয়ের। যেখানে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা দুই ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসির। নিজ নিজ দেশ পর্তুগাল ও আর্জেন্টিনাকে শেষ ষোলর বাধা পার করাতে পারলেই শেষ আটে দেখা হতো এই দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বীর।

কিন্তু ফুটবল বিধাতার মর্জি ছিলো যেন ভিন্নটাই। রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের বদলে, মেসি-রোনালদোর দেখা হবে এবার দেশে ফেরার বিমানে! একইদিন হয়তো তারা দেশে ফিরবে না, তবে দেশে ফেরাটা একইদিনে নিশ্চিত হলো এই দুই জীবন্ত কিংবদন্তীর।

আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির বর্ণিল ক্যারিয়ারের একমাত্র আক্ষেপ দেশের হয়ে বড় কোন শিরোপা জিততে না পারা। ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ ছিলো এটি। দেশের হয়ে বড় কোন শিরোপারও অন্যতম প্রধান সুযোগ। গ্রুপ পর্বে হতাশাজনক পারফরম্যানসের পর, সকলের আশা ছিল নকআউট পর্বে জ্বলে উঠবেন মেসি, ঘুরে দাঁড়াবে তার দল আর্জেন্টিনা।

অথচ মাঠে হয়েছে তার উল্টোটাই। দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামে মেসির আর্জেন্টিনা। শক্তিশালী ফ্রান্সের বিপক্ষে একসময় ২-১ গোলে এগিয়েও ছিল মেসির আর্জেন্টিনা। ফরাসিদের জমাট ডিফেন্স ভেদ করেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখছিলেন মেসি। কিন্তু রক্ষণভাগের ব্যর্থতায় শেষপর্যন্ত ৪-৩ গোলের হতাশায় শেষ ম্যাচটি।

অনুজ্জ্বল থাকার দিনেও দুইটি গোলে সহায়তা করেন মেসি। কিন্তু এই দুই এসিস্ট ম্যাচ শেষে হয়ে পড়ে পুরোপুরি মূল্যহীন। কেননা ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দল ফ্রান্সের বিপক্ষে ৪-৩ গোলে হেরে বিদায়ঘণ্টা নিশ্চিত হয়ে যায় আর্জেন্টিনার, আরও একবার অপমৃত্যু ঘটে দেশের হয়ে মেসির বড় কোন শিরোপা জেতার স্বপ্নের।

মেসির বিদায় নিশ্চিত হওয়ার খবর জেনেই দিনের অন্য ম্যাচে মাঠে নামেন পর্তুগালের যুবরাজ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। চির প্রতিদ্বন্দ্বীর বিদায়ে হয়তো খানিক চাপই অনুভব করছিলেন তিনি। যার ফলে উরুগুয়ের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে স্বরূপে দেখা যায়নি পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলারকে।

শক্তিমত্তার বিচারে বিশ্বের বড় বড় দলগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে পর্তুগাল। তবু হার না মানার অদম্য ইচ্ছাই বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার শক্তি দিয়েছিল পর্তুগিজদের। যে শক্তি বলে ২০১৬ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপও জিতেছিল পর্তগাল। চলতি বিশ্বকাপেও শুরুটা খারাপ হয়নি তাদের।

গ্রুপের ৩ ম্যাচে অপরাজিত থেকেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছিল পর্তুগাল। এই ৩ ম্যাচে ১টি হ্যাটট্রিকসহ ৪ গোল করেন রোনালদো। উরুগুইয়ানদের বিপক্ষে তার কাছ থেকে দলের আশা ছিল আরও বেশি। কিন্তু তিনি ব্যর্থতা হন আশা পূরণে। তার দল পর্তুগালও পারেনি উরুগুয়ের মতো দলকে হারাতে।

যার ফলে ২-১ গোলে হেরে আর্জেন্টিনার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে নকআউট পর্ব থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে পর্তুগালও। বয়সের বিচারে আর হয়তো ফুটবলের বিশ্ব আসরে খেলা হবে রোনালদোর। ফলে ১৮ ক্যারেটের সোনালী ট্রফিটা অধরাই থেকে যাবে ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সকল শিরোপা জেতা রোনালদোর।

আর ফুটবল বিধাতার নির্মম পরিহাসে যেখানে শেষ আটে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালের, যেখানে সারা বিশ্ব দেখার অপেক্ষার ছিল মেসি-রোনালদোর ধ্রুপদী এক লড়াইয়ের; সেখানে এই দুই দলেরই বিদায়ে শেষ আটের প্রথম ম্যাচটি খেলবে ফ্রান্স ও উরগুয়ে।

আগামী ৬ জুলাই নিঝনি নভগ্রোদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post পারলো না আর্জেন্টিনা, পারলেন না মেসি
Next post ক্যালিফোর্নিয়া ষ্টেট আওয়ামী যুবলীগের প্রথম ত্রী-বার্ষীক সম্মেলন ও অভিষেক সম্পন্ন
Close